নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘বর্তমানে দেশে কারা ষড়যন্ত্র করছে? তারা হচ্ছে, বিএনপি ও জামায়াত। এর কারণ তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখনও মেনে নেয়নি। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। জনগণ ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের নারকীয় কর্মকা- ভোলেনি, ভোলা যায় না। দেশব্যাপী সিরিজ বোমা, গ্রেনেড হামলা, বাংলা ভাইয়ের উত্থান, বিদ্যুৎ চাইতে গিয়ে কানসাটে গুলি, সার চাইতে গিয়ে ১৮ কৃষকের মৃত্যুর কথা দেশবাসী ভুলতে পারে না।’
যশোরের চুড়ামনকাটি থেকে চান্দুটিয়া পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার আব্দুর রাজ্জাকের নামে সড়কের নামকরণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কাজী নাবিল এমপি এসব কথা বলেন। শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের চান্দুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ উপলক্ষে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
তিনি শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছরে দেশে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। তার সময়কালে দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। তার কারণে আমরা বহুদিনের প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু পেয়েছি। এ কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এখন খুব সহজেই রাজধানীতে যেতে পারছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এসেছে।’
তিনি বিএনপি-জামায়াত প্রসঙ্গে বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে তারা প্রায় তিন হাজার সরকারি অফিসে আগুন দেয়। চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। ঘুমন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ট্রেনলাইন উপড়ে ফেলেছে, গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে। তাদের সেই নাশকতা দেশবাসী কখনোই ভুলবে না।’
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনও শক্তি নেই যারা দেশে নাশকতা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করবে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের মানুষ ফের আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকাকে বিজয়ী করবে। তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে।’
দেয়াড়া আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন সুবেদার আব্দুর রাজ্জাকের (যার নামে সড়কের নামকরণ) ছেলে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এসএম তরিকুল ইসলাম।
এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে অবশ্যই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে হবে। পাকিস্তানিরা কীভাবে আমাদের শোষণ করেছিল, কীভাবে আমাদের শুধু কেরানি বানিয়ে রাখতো, কীভাবে শুধু স্কুলমাস্টার করে রাখতো আর নিজেরা সরকারি সব বড় বড় পদে আসীন হতো এসব জানতে হবে। তারা কখনোই বাংলাদেশকে আপন ভাবেনি, তারা এ দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে পাকিস্তানকে সমৃদ্ধশালী করেছে। সেখানে বড় বড় শিল্প কলকারখানা গড়েছে। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যে ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছিল, আবার বাবা তার ১৪ নম্বরে ছিলেন। ৬ মাস আমরা তার কোনও হদিস পাইনি। পরে বাবার মুখে শুনেছি, তাদের অমানুষিক নির্যাতন করা হতো শুধু একটি কথা আদায়ের জন্যে। তা হলো, বঙ্গবন্ধুর উপরে সমস্ত দোষ চাপানোর। কিন্তু তারা কেউই মুখ খোলেননি। কেননা বঙ্গবন্ধু তখন কোনও ব্যক্তি নন, তখন তিনি একটি দেশের প্রতীক, দেশের স্বাধীনতার প্রতীক ছিলেন।’
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, জেলা অওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, শহিদুল ইসলাম, প্রভাষক লিয়াকত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।