নিজস্ব প্রতিবেদক
রোববার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যশোর সদরের কামারগন্যা গ্রামের বৃদ্ধ আলতাফ হোসেন। তিনি বলেন, তার ছেলে রফিকুল ইসলাম বিদেশে রয়েছেন। পুত্রবধূ লিতুনজিরা প্রবাসী রফিকুল ইসলামের পাঠানো ১৪ লাখ টাকা ও ১৩ ভরি সোনার গহনা নিয়ে রাতের অন্ধকারে অন্য পুরুষের সাথে পালিয়ে গেছেন। পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে এক সন্তানের জননী লিতুনজিরা এই কাজ করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আলতাফ হোসেন অভিযোগ করেন, তার বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে পিকুল গত ১৪ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় রয়েছে। ১০ বছর আগে বাঘারপাড়া থানার শালবারাট গ্রামের সদর আলী মোল্যার মেয়ে লিতুনজিরার সাথে পারিবারিকভাবে রফিকুল ইসলামের (ডাক নাম পিকুল) বিয়ে হয়। এই বিয়ের ব্যাপারে সর্বাধিক ভূমিকা পালন করেন মেয়ের মামা নলডাঙ্গা গ্রামে ইছা মেম্বর। বছর না পেরোতেই লিতুনজিরা এক পুত্র সন্তানের মা হয়। বংশের একমাত্র প্রদীপ পোতা ছেলের নাম রাখা হয় ফাহিম হোসেন। নিজের ছেলে সুদুর প্রবাসে জীবন কাটালেও নাতি ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে সময় পার করছিলেন বৃদ্ধ দম্পত্তি। স্ত্রী আর ছেলের ভোরণ পোষনের জন্য প্রতি মাসে রফিকুল বিদেশ থেকে ৩০/৪০ হাজার করে টাকা পাঠাতেন।
কখনো বিকাশের মাধ্যমে কখনো ব্যাংকিং চ্যানেলে এই টাকা পাঠাতেন স্ত্রী লিতুনজিরা ও লিতুনজিরার মায়ের কাছে। বউয়ের কানভাঙানিতে ছেলে রফিকুলের সাথে মা বাবার সম্পর্কে ফাটল ধরে। এভাবে গত ১০ বছরে রফিকুল প্রায় অর্ধ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন স্ত্রী ও স্ত্রীর মায়ের নামে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই তিন মাসে রফিকুল বাড়ি করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে প্রায় ১৩ লাখ টাকা পাঠিয়েছিল তার স্ত্রীর কাছে। বাড়ি করার জন্য ইটও ক্রয় করা হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মালয়েশিয়া থেকে স্ত্রী ও ছেলের জন্য ১০/১২ ভরি স্বর্ণাংকার পাঠিয়ে ছিল রফিকুল।
আরও পড়ুন:যশোর করোনারি কেয়ারে অন্ধকারে বসে রোগী সেবা
সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, স্বামী বিদেশে থাকায় সুন্দরী লিতুনজিরা জড়িয়ে পড়ে একাধিক পরকীয়ায়। স্থানীয় মাদ্রাসার এক শিক্ষকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় শালিস বৈঠক পর্যন্ত হয়। মানসম্মান আর সন্তানের কথা ভেবে সব মেনে নিয়ে সেই স্ত্রীকে নিয়েই সংসার করছিল প্রবাসী পিকুল ও তার বাপ মা। এক পর্যায়ে লিতুনজিরা মায়ের পরামর্শে সংসার থেকে আলাদা হয়ে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সে মোবাইল ফোনে পর পুরুষের সাথে কথা বলতে থাকে। ছেলের এক মৌলভী শিক্ষকের সাথে তার পরকীয়া ছিল ওপেন সিক্রেট। রাতের পর রাত জেগে সে ওই মৌলভী স্যারের সাথে প্রেমালাপে মত্ত থাকতো।
এসব খবর পেয়ে প্রবাসী রফিকুল দেশে আসার ঘোষণা দেয়। কিন্তু তাতে বাঁধ সাথে স্ত্রী লিতুনজিরা। সে স্বামীকে ফোন করে সাফ জানিয়ে দেয় এই মুহুর্তে তার বাড়ি আসার দরকার নেই। আর সে যদি স্ত্রীর কথা না শুনে বাপমার কথা বিশ^াস করে বাড়ি চলে আসে তাহলে সে ছেলের হাত ধরে যেদিকে মন চাই সেদিকে চলে যাবে। এই খবর শুনে রফিকুল বাড়ি না এসে বিমান টিকিট কম দামে বিক্রি করে দেয়। আর এই সুযোগে বাড়ি করার জন্য জমানো সব টাকা ও সোনার গহনাসহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র নিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় লিতুনজিরা।
এসব ঘটনার পর শ^শুর আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় ও বাঘারপাড়া থানায় পুত্রবধুর সব অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু কোন প্রতিকার না পেয়ে ৯ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ও অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলা রেকর্ড করে আগামী ৫ জুনের মধ্যে ঘটনার তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:যশোর অঞ্চলে এবার নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা
১ Comment
Pingback: কুষ্টিয়ায় বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার