নিজস্ব প্রতিবেদক: বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে যশোরে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ সংগঠন পাঠকের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। শুক্রবার বিনাখরচে পাঠকের বাড়িতে বই পৌঁছে দেয়া কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। অনলাইনে ফরম পূরণ করে বইয়ের চাহিদা জানাতে হবে।
এরপর সপ্তাহে একটি বই পড়ির স্বেচ্ছাসেবকরা পাঠকের বাড়িতে বিনাখরচেই পৌঁছে দিবে। প্রতি শনিবার পাঠকরা এই সুবিধা পাবেন। একই সাথে সপ্তাহে একটি বই পড়ার পাঠচক্র চলমান থাকবে। যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহজাহান কবীরের উদ্যোগে এই ব্যতিক্রমী আন্দোলন চলছে। ইতোমধ্যে শহরজুড়ে সাড়াও মিলেছে।
শুক্রবার বিকেলে যশোর টাউন হল ময়দানে সপ্তাহে একটি বই পড়ি উদ্যোগের আরও একটি নতুন কার্যক্রম ‘সাংস্কৃতিক গ্রন্থাগার’ ও ‘বইয়ের বন্ধু’ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আহসান হাবীব।
উদ্বোধক ছিলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিক হোসেন উদ্দীন হোসেন, যশোর ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু ও সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সপ্তাহে একটি বই পড়ির উদ্যোক্তা যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহজাহান কবীর।
তিনি বলেন, ‘বইয়ের বন্ধু’ উদ্যোগটির প্রবক্তা ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামক একটা সংগঠনের। যেটি বই পড়তে উৎসাহিতকরণের ক্ষেত্রে যশোরকে অতিক্রম করে পুরো দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। ‘বইয়ের বন্ধু’ হলো ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’র অঙ্গসংগঠন সাংস্কৃতিক গ্রন্থাগারের অধীন ‘ফ্রি বুক হোম ডেলিভারি সার্ভিস’।
যার মূল উদ্দেশ্য হলো পাঠকের দোরগোড়ায় তার কাক্সিক্ষত শ্রেষ্ঠ বইটি পৌঁছে দিয়ে আসা এবং উন্নত পাঠক শ্রেণি তৈরিতে সহায়তা করা। ফুডপাণ্ডা যেমন খাবার পৌঁছে দেয় গ্রাহকের ঠিকানায় ঠিক তেমনি বইয়ের বন্ধুরাও বিনামূল্যে বাসায় পৌঁছে দিবে বই।
ব্যাপারটাতে বেশ অভিনবত্বের এবং ইতিবাচকতার সুবাস রয়েছে যেটা নিঃসন্দেহে ভালো পাঠক তৈরির মাধ্যমে আলোর ও ভালোর মশাল জ্বেলে দিতে পারে নাগরিক বিবেকে। বইয়ের বন্ধু লোগো সম্বলিত সাদা রঙের সুন্দর টি-শার্ট পরিহিত ও কাঁধে ব্যাগসহ দশজন যুবক সাইকেল সম্মুখে হাস্যেজ্জ্বল মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তারা সবাই সপ্তাহে একটি বই পড়ি সংগঠনটির সদস্য এবং বইয়ের বন্ধু হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সপ্তাহে এক দিন শনিবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত যশোর শহরের মধ্যে পাঠকের নিকট বই পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরও বলেন, তাদের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি এবং সুহৃদমহল থেকে বই সংগ্রহ করেছেন এবং তারা নতুন পাঠক সৃষ্টি ও বই পড়াতে উৎসাহিত করতে চান। তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা গেল যে, যশোর শহরস্থ যেকোন ব্যক্তি অনলাইনে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে সদস্য হয়ে সংগঠনটির সংগ্রহে থাকা (সপ্তাহে একটি বই পড়ির ফেসবুক গ্রুপে আপলোডকৃত) বিভিন্ন বইয়ের তালিকা থেকে আগ্রহী পাঠক তার নিজের পছন্দ মতো বই পছন্দ করে নির্ধারিত পূরণ করে সাবমিট করলে সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিনে বইয়ের বন্ধুরা একে একে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিবে কাক্সিক্ষত সকল বই। এভাবে পরের সপ্তাহে আবার সপ্তাহ পঠিত বই ফেরত নিয়ে পাঠকের জন্য পুনরায় আবেদনকৃত নতুন বই নিয়ে হাজির হবে বইয়ের বন্ধুরা। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ ও চাকরিজীবীসহ সকল ধরণের পাঠকের চাহিদা পূরণ করবে সংগঠনটি।