নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম এবং শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে বিশেষ বাহিনীর সদস্যকে মারপিটের পর ১১ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের ঘটনায় নারীসহ চারজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই নারীসহ এই মামলার দুই আসামিকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো, সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে বাইতুল আমান সাগর, নজরুল ইসলাম সরদারের ছেলে শফিকুল ইসলাম সোহাগ ও এড়েন্দা গ্রামের গোলাম হোসেনের মেয়ে রিনা আক্তার সোনিয়া। এই মামলার পলাতক আসামি সুজলপুর গ্রামের এমএ মালেক সরদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম।
মামলার বাদী সাগর আলী ঠাকুরগাওয়ের বালিডাঙ্গী উপজেলার ভানোর দিঘিরপাড়া গ্রামের একরামুল হকের ছেলে সাগর আলী। তিনি যশোরে বিশেষ বাহিনীতে চাকরি করেন।
বাদী মামলায় বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আসামি রিনা আক্তার সোনিয়ার সাথে তার পরিচয় হয়। এরপরে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান, কথাপোকথন এবং প্রেমের সম্পর্কে পৌছায় দু’জনে। পরবর্তীতে বাদীর সাথে দেখা করার জন্য অনুরোধ করে রিনা। গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ধর্মতলায় তারা দু’জনে দেখা করেন। সেখান থেকে ঘুরতে বেরিয়ে মুড়লী হয়ে সুজলপুর গ্রামে রিনার এক বান্ধবীর বাড়িতে যান। সেখানে যাওয়ার পরে ঘরের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য মেয়েটি প্রস্তাব দেন। রাজি না হলে জোরজবরদস্তি শুরু করে মেয়েটি। পাশাপাশি ভিডিও করা হয়। এরইমধ্যে বাইরে থেকে অন্য আসামিরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ি সাগরকে মারপিট করে। এরপরে তার কাছে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। বাধ্য হয়ে ১১হাজার টাকা মোবাইলে আসামিদের বিকাশে এনে দেয়া হয়। একই সাথে সাগরের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোনসেটও নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ১৪ সেপ্টেম্বর রিনা মোবাইল করে আরো ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। রাজি না হলে ধারণকৃত ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নেন সাগর আলী। ১৮ সেপ্টেম্বর চাঁদার টাকা না দেয়ায় রিনা বাদীর ইউনিটে চলে যান। সেখানে গিয়ে ভিডিও দেখিয়ে বিচার দাবি করেন। এসময় ইউনিটের কর্মকর্তারা রিনাকে আটকে তার কাছ থেকে চাঁদা ১১ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করে। এই ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে কোতোয়ালি থানায় ওই চারজনের বরিুদ্ধে মামলা করেন সাগর।
তবে রিনার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া তার নিজস্ব মোবাইলে আরো বেশ কয়েকটি ছেলেদের সাথে প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণা করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ভোর রাতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পলাতক আসামি সিরাজুল ইসলামকে আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আল আমিন হোসেন।
