নিজস্ব প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় আইন উপেক্ষা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে যশোর শহরের পাইপপট্টি মোড়ে নির্বাচনী পথসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী নাবিলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে একজন বক্তব্যও দেন। দুই শিক্ষকেরা হলেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেশারিশ এন্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সামাদ ও পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্লা। এরমধ্যে আব্দুস সামাদ নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে বক্তব্য দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যশোর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী টানা দুইবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যশোর শহরের পাইপপট্টি এলাকাতে কাজী নাবিলের পথসভার আয়োজন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হেলালুল ইসলাম হেলাল। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যশোর-৩ আসনে সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদ, সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলিয়া আফরোজ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর জহুরুল ইসলাম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লাইজু জামান, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই কর্মকর্তা। বক্তব্য শেষে কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে তারা পাইপপট্টি এলাকায় নৌকা প্রতীকে লিফলেট বিতরণ করেন।
বিশ^বিদ্যালয় আইনে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অথবা অন্যত্র কোনো আইন সভার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে অথবা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে বা অন্য কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করতে বা প্রভাব খাটাতে পারবেন না।
দুইজন শিক্ষক নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেশারিশ এন্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সামাদ বলেন, শিক্ষকরা নির্বাচনী সভাতে অংশ নিতে পারবেন বলে তিনি দাবি করেন। তার বক্তব্য নেয়ার সময় তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আব্দুস সালামের ভাই দাবি করে এই প্রতিবেদককে হুমকি দেন। তিনি বলেন- ‘নিউজ করলে ভালো হবে না। এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, এই নিউজটা করলে ভালো হবে না। এই নিউজটা আপনি করেন না। আপনার অবস্থা ভালো হবে না। এক্ষুনি নাবিল ভাইয়ের কানে পৌঁচ্ছে দিচ্ছি আপনার নাম। এই নিউজ করলে কেউ কিছু করতে পারবে না। আপনার সাথে দেখা হবে হ্যা’।
এই বিষয়ে জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার আনিচুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি শিক্ষকদের কোন প্রার্থীর হয়ে প্রচারণাতে অংশ নিতে পারবেন না। এমনকি তারা ভোট প্রার্থনাও করতে পারেন না। যবিপ্রবির দুই শিক্ষক নির্বাচনী প্রচারণাতে অংশ নিয়ে ভুল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই নির্বাচনী আচারণবিধির যে শাস্তি রয়েছে, সেটা নেওয়া হবে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে তারা কোন রাজনীতিক দলের প্রচার-প্রচারণাতে অংশ নিতে পারেন না। তার পরেও তারা অংশ নেওয়াতে তাদের শোকজ করা হবে। তাদের এমন ধরণের কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। অভিযোগ পেলে ইউসিসি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।