নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে নানা আয়োজনে বিশ্ব মা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সাংস্কৃতিক সংগঠন শেকড় যশোর রোববার সন্ধ্যায় টাউনহল ময়দানের শতাব্দি বটবৃক্ষ পাদদেশে মায়েদের সমাবেশ, রত্নগর্ভা সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তীব্র তাপদাহের মাঝেও এই আয়োজনে ছিল না উৎসাহের ঘাটতি।
দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতায় এবারেও পাঁচ রত্নগর্ভা মাকে প্রদান করা হয়েছে সম্মাননা। তারা হলেন রাজিয়া সুলতানা, মোসাম্মৎ সাহানারা খাতুন, নাজমা খাতুন, নুরজাহান বেগম ঝর্ণা (মরণোত্তর) ও আলহাজ্ব শামসুন্নাহার বেগম (মরণোত্তর)। অনুষ্ঠানের অতিথি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ রত্নগর্ভাদের উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে তুলে দেন সম্মাননা পদক।
অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ মুস্তাফিজুর রহমান, সাংস্কৃতিকজন হারুন অর রশিদ, কবি শাহনাজ পারভীন, শ্রাবণী সুর ও অ্যাঞ্জেলা গোমেজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মা দিবস উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক হাবিবা শেফা এবং সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠন শেকড় যশোরের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু।
মরণোত্তর সম্মাননা প্রাপ্তদের পক্ষে তাদের গর্বিত সন্তানেরা গ্রহণ করেন পদক।
রাজিয়া সুলতানা : পাঁচ সন্তানের জননী রাজিয়া সুলতানা। এসএসসির গণ্ডি পেরুনের আগেই ১৯৭২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জননী তিনি। প্রথম সন্তান মিরপুর মেট্রোরেলের যুগ্ম সেক্রেটারি খন্দকার এহতেশামুল করিম হিল্লোল, দ্বিতীয় সন্তান মেরিন ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার ইফতেখার কবির হিন্দোল, তৃতীয় সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খন্দকার এহেসানুল কবীর হিমেল, চতুর্থ সন্তান শিক্ষক নাসরিন সোনিয়া সুলতানা রিমা (মাস্টার্স) এবং পঞ্চম সন্তান খন্দকার তানজিলা সুলতানা লোপা (অনার্স)।
সাহানারা খাতুন : নবম শ্রেণি পাস পাঁচ সন্তানের জননী সাহানারা খাতুন। প্রথম সন্তান মোসাম্মৎ হালিমা খাতুন (এমএ), দ্বিতীয় সন্তান মনিরামপুর উপজেলার মেডিকেল অফিসার সাইফুদ্দিন আহমেদ, তৃতীয় সন্তান ঢাকা ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার আবু সাঈদ, চতুর্থ সন্তান মাগুরা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং পঞ্চম সন্তান তাসলিমা খাতুন (এমএসসি)।
নাজমা খাতুন : সপ্তম শ্রেণি পাশ নাজমা খাতুন তিন গর্বিত সন্তানের জননী। তার প্রথম সন্তান বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার এসএম আখতারুজ্জামান সুমন, দ্বিতীয় সন্তান মৌসুমী আক্তার ইভা (এমএ) এবং তৃতীয় সন্তান ডাক্তার এস এম কামরুজ্জামান সোহান।
নূরজাহান বেগম ঝর্ণা: সাত সন্তানের জননী নবম শ্রেণি পাস নুরজাহান বেগম ঝর্ণা, তার বড় সন্তান আমেরিকায় বসবাসরত সামিয়া করিম (বিএ), দ্বিতীয় সন্তান নার্গিস ইসলাম (বিএ), তৃতীয় সন্তান বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু, চতুর্থ সন্তান ইসমত আরা, পঞ্চম সন্তান জেসমিন আক্তার, ষষ্ঠ সন্তান আমেরিকায় বসবাসরত ইশতিয়াক আহমেদ (বিএ) ও সপ্তম সন্তান সাবরিনা আক্তার।
আলহাজ্ব শামসুন্নাহার বেগম: সাত সন্তানের জননী স্বশিক্ষায় শিক্ষিত শামসুন্নাহার বেগম। প্রথম সন্তান চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাক্তার মিজানুর রহমান, দ্বিতীয় সন্তান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক আনিসুর রহমান, তৃতীয় সন্তান কালিগঞ্জ সরকারি মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান, চতুর্থ সন্তান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তবিবুর রহমান, পঞ্চম সন্তান ‘আমাদের বাড়ি’ ডাইরেক্টর আতিয়ার রহমান, ষষ্ঠ সন্তান সিনিয়র শিক্ষক এলিজা পারভিন
এবং সপ্তম সন্তান রুমেনা খাতুন।
অনুষ্ঠানে রত্নগর্ভা তিন মা রাজিয়া সুলতানা, সাহানারা খাতুন ও নাজমা খাতুন অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এছাড়া মরণোত্তর নূরজাহান বেগম ঝর্ণার গর্বিত সন্তান ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু এবং শামসুনাহার বেগমের সন্তান এলিজা পারভীন পদক গ্রহণ করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজক সংগঠনের ছেলে মেয়েরা পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ কর্মীদের দেখামাত্রই গ্রেফতারের নির্দেশ