জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেছেন- বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে এবং তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির সব অর্জন বিসর্জন দিয়েছেন সামরিক জান্তা জিয়া ও এরশাদ। তাদের ২২ বছরের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে ফেলা হয়েছে। সেইসব জঞ্জাল দূর করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে দুর্বার গতিতে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার যশোর টাউনহল ময়দানে মরহুম রওশন আলী মঞ্চে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন-ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সামনে আরও একটি ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীচক্র। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন- সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে জগণকে প্রস্তত থাকতে হবে। আগামীর নেতৃত্ব যারা দেবেন তাদের প্রস্তুত করে তুলতে হবে।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কাজী নাবিল আহমেদ বলেন- বিএনপি-জামায়াত পেছন দরজা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে কিন্তু দেশবাসী এখন যতেষ্ট সচেতন। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ এবং আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে গোটা জাতি এখন উম্মুখ হয়ে আছে। দেশবাসীর স্বপ্নকে পায়ে ঠেলে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নীলনক্সা বাস্তবায়নে সফল হবে না। এজন্য জনগণকে আরও সচেতন করে তুলতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রচার-প্রচারণায় মাঠে থাকতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ হলে জনগণ কিভাবে উপকৃত হবেন; তাও বলতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপত ও বীরমুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, জিয়াকে বঙ্গবন্ধু পদোন্নতি দিয়েছিলেন অথচ সেই জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভোর রাতে সেভ করে ক্ষমতা দখলের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। যারা তাকে নৃশংস হত্যার খবর দিতে গিয়েছিলেন, তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। আক্ষেপ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন- বঙ্গবন্ধুকে ৫৭০ সাবান দিয়ে গোসল ও রিলিফের কাপড় দিয়ে দাফন করা হয়েছিল কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস; জিয়ার মৃত্যু ও তার লাশ নিয়ে আজও নানা প্রশ্ন রয়েছে। যে কাঠের বাক্সে কথিত লাশ আনা হয়েছিল, তাতে কি ছিল খালেদা জিয়াও তা দেখতে পারেনি। তিনি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য জাতিকে জানানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংবিধানের মূলমন্ত্র বাঙালির ঠিকানা’ উল্লেখ করে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বলেন- বাংলা, বাঙালি ও বঙ্গবন্ধু এক এবং অভিন্ন।
পৌর মেয়র হায়দার গনী খান পলাশ বলেন- ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে কিন্তু তার আগেই সরকার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে সমর্থ হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, যশোর ইনস্টিটিউটের সম্পাদক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু ও প্রেসক্লাব যশোরের সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান।
সমাপনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন- মহান বিজয় দিবস বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবোজ্জ্বল দিন। এইদিনের প্রত্যয় হোক আগামীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করে তুলবো। এই দায়িত্ব সবাইকে নিতে হবে।
সভা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন প্রতিমন্ত্রীসহ অতিথিবৃন্দ।
আরও পড়ুন: ওরা লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা