নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বেনাপোলের মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত বাদশা মল্লিক ও তার স্ত্রী রোকসানার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে দুদক। দুদকের করা মানিলন্ডারিং মামলায় বুধবার সিনিয়র স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সাবেক সহকারী পরিচালক বর্তমানে বাগেরহাটের উপপরিচালক মোহা. মোশাররফ হোসেন।
বাদশা মল্লিক বেনাপোলের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাতআয়বহির্ভূত দুই কোটি ৪১ লাখ সাত হাজার ৬৫৪ টাকার সম্পর্দ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল আমিন। এরআগে বাদশা মল্লিক তার স্ত্রী রোকসানার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলা ও চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে মাদকের কারবার যেখান থেকে সহজে করা যায় সেখানেই বিয়ে করেন বাদশা। তার বাংলাদেশে তিনজন ও ভারতে একজন বউ রয়েছে। বাদশা মল্লিকের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ায় দুদক তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট বাদশা মল্লিক দুদক কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, তার ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকার স্থাবর ও তিন লাখ ৭০ হাজার ৩২৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। কিন্তু দুদক তদন্তকালে বাদশা মল্লিক ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ৬১ হাজার ৯২১ টাকার স্থাবর ও ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৯২৮ টাকার অস্থাবর অর্থাৎ মোট ছয় কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৮৪৯ টাকার সম্পদ পায়। সেই মোতাবেক তিনি প্রদর্শিত অর্থের চেয়ে পাঁচ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।
তিনি আয়কর নথিতে তিন কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ১৯৫ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন। বিনিয়োগসহ তার প্রদর্শিত আয় বাদ দিলে তিনি জ্ঞাতআয়বহির্ভূত দুই কোটি ৪১ লাখ সাত হাজার ৬৫৪ টাকার সম্পর্দ অর্জন করেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। এই সম্পদের কিছু অংশ তার স্ত্রী রোকসানার নামে রয়েছে বলে তদন্তে উঠে আসে। এরপর তদন্ত শেষে উল্লিখিত দুই জনকে অভিযুক্ত করে বুধবার আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।