বেনাপোল প্রতিনিধি
যশোরের বেনাপোল সীমান্তে যৌতুকের দাবিতে ফাতেমা খাতুন (২৭) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বেনাপোলের কাগমারী গ্রাম থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তবে স্বজনদের দাবি, ফাতেমা খাতুনকে পিটিয়ে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালাচ্ছেন নিহতের স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
নিহত ফাতেমা খাতুন একই এলাকার সালাউদ্দীনের স্ত্রী এবং বেনাপোলের পোড়াবাড়ী নারায়ণপুর গ্রামের শাহাবুদ্দিনের মেয়ে।
বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের কাগমারী গ্রামের ইউপি সদস্য সাবুর আলী জানান, মরদেহ যেভাবে ঘরে ছিল তা দেখেই বোঝা যায় নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে পরিবারের সদস্যরা। এ ছাড়া সালাউদ্দীনের একাধিক বিয়ে। যৌতুকের দাবিতে প্রায় স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। বর্তমানে স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘটনার পর থেকে বাড়ির মূল্যবান সামগ্রী ও গরু, ছাগল নিয়ে পালিয়েছেন। পুলিশ সঠিক তদন্ত করলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে। তিনি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন বছর আগে সালাহউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় ফাতেমার। সালাহউদ্দিন পেশায় ট্রাকচালক। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী,শ্বশুর-শাশুড়ি এবং দেবরসহ অন্য সদস্যরা নির্যাতন করে আসছিল।
ফাতেমার গরীব বাবা নিজের সর্বস্ব বিক্রি করে ৪-৫ লাখ টাকা দিয়ে জামাই সালাউদ্দিনকে একটি কাভার্ডভ্যানও কিনে দেন। এরপরও স্ত্রীকে প্রায় মারধর করতেন সালাহউদ্দিন। এ নিয়ে ফাতেমার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিশ-বিচারের মাধ্যমে সালাহউদ্দিনকে সতর্ক করা হয়।
বেনাপোল পোর্টথানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, অপরাধীদের ধরতে পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এখনও নিহতের কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।