নিজস্ব প্রতিবেদক
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে অভিযান চালিয়ে ঘুষের ২ লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ আটক রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ও তার সহযোগী বহিরাগত হাসিব উদ্দিনকে কারাগারে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে তাদেরকে যশোরের সিনিয়র স্পেশাল জেলা জজ আদালতে হাজির করা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক সালেহুজ্জামান কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
সোমবার বেনাপোল কাস্টমস হাউজে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে বহিরাগত হাসিবকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারকে হেফাজতে নিলেও সাড়ে চার ঘণ্টার অভিযান শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। মঙ্গলবার ফের তাকে আটক করা হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আল-আমীন জানান, বেনাপোল কাস্টম হাউসে ঘুষবাণিজ্য চলছে এবং মোটা অংকের টাকা লেনদেন হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই। ঘটনাস্থল থেকে ঘুষের টাকা উদ্ধার ও জড়িতদের আটক করা হয়। আটকদের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে যশোর জেলা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত একটি টিম বেনাপোল কাস্টমস হাউসে প্রবেশ করে রাজস্ব শাখা, মূল্যায়ন শাখা ও প্রশাসনিক দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে তল্লাশি চালায়। এ সময় ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় ঘুষের টাকাসহ অভিযুক্ত হাসিবকে হাতেনাতে আটক করে দুদক। আর হাসিবের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্মকর্তা শামীমাকে আটক করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোলে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে শুল্ক ফাঁকির ব্যবসা চালিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ একাধিক সিন্ডিকেট। বর্তমান কমিশনার যোগদানের পর সিন্ডিকেটগুলি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে কড়াকড়ির মাঝেও ‘বিকল্প উপায়ে’ বহিরাগত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধ লেনদেন অব্যাহত রেখেছিলেন কাস্টম হাউজের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের নিযুক্ত বহিরাগত প্রতিনিধির কাছে অগ্রিম ঘুষ দিয়ে ছাড় করাতে হচ্ছিল আমদানি পণ্যের ফাইল। চাহিদামত টাকা না দিলে জরুরি শিল্পের কাঁচামাল পরীক্ষণের নামে আটকে রাখা হয় দিনের পর দিন। আর ঘুষ দিলে মেলে তাৎক্ষণিক ছাড়পত্র।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সহকারী কমিশনার অটল গোস্বামীর নেতৃত্বাধীন ইউনিটে এমন হয়রানির ঘটনা সর্বাধিক। তবে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য জানতে কয়েক দফায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া দেননি তিনি।

 
									 
					