কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় বোরো চাষাবাদকে ঘিরে মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে মহাকর্মযজ্ঞ। জমি প্রস্তুত, বীজতলা থেকে চারা তোলা, জমিতে চারা লাগানো নিয়ে সকাল সন্ধ্যা ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এ পর্যন্ত উপজেলার ৮০ ভাগ জমিতে চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে এ বছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এ উপজেলার সিংহভাগ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন কৃষি। পিছিয়ে পড়া এই জনপদের সামগ্রিক অর্থনীতি কৃষিকে ঘিরেই আবর্তিত। পূর্ব পুরুষের এই পেশাকে আঁকড়েই সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখে থাকেন এখানকার কৃষিজীবী মানুষেরা। উৎপাদিত ফসলের কাক্সিক্ষত মূল্যের উপরই নির্ভর করে তাদের ভাল থাকা কিংবা মন্দ থাকা।
বিশেষ কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাক না হলে, চাষের উপযুক্ত মাটি, আবহাওয়াসহ অনুকূল পারিপার্শ্বিকতায় এ উপজেলায় বরাবরই ধানের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। দুই বছর আগের মন্দা বাজার দরের তুলনায় সাম্প্রতিক বছরে ধানের ন্যায্য দাম পাওয়ার ফলে ধান চাষে নিরুৎসাহী মনোভাব কাটিয়ে ভালো লাভের আশায় চাষিরা নব উদ্যোমে বোরো চাষে মেতেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সাগরে সৃষ্ট লঘু চাপের ফলে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াসহ জমিতে পানি জমে যাওয়ায় এবার আবাদে দেরি হয়েছে। তাই দ্রুত চারা লাগানো শেষ করতে নাওয়া খাওয়া ভুলে সবাই খেটে চলেছে। ইতিমধ্যে এখানে লক্ষ্যমাত্রার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ জমিতে চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে।
কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবির কুমার বিশ্বাস বলেন, বোরো চাষে প্রযুক্তিগত নানা সহায়তার পাশাপাশি সরকারের কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ৫ হাজার কৃষকের মধ্যে বিনামূল্যে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে কৃষকরা অনেক ব্যস্ত সময় পার করছে। আমরা আশা করছি এবছর বোরো আবাদ ও উৎপাদন বাড়বে।
উপজেলায় তালিকাভুক্ত বোরো চাষি প্রায় ৩০ হাজার জন। এ বছর উপজেলায় ১৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে মোট ১ লাখ ১৩ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ কোনো দুর্যোগ দুর্বিপাক না হলে, চাষের উপযুক্ত মাটি, আবহাওয়াসহ অনুকূল পারিপার্শ্বিকতায় ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে সাধারণ কৃষকরা।