নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর চেম্বার অব কমার্সকে যারা কুক্ষিগত রাখতে চায় তারাই আবারও মামলা করে আজ শনিবারের ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে। মূলত ভোটারদের রায়ের প্রতি আস্থা না থাকায় বারবার এই ধরণের ঘটনার জন্ম দেয়া হচ্ছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানটি অচল হয়ে পড়ছে। ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন তাদের ভোটাধিকার। বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের সকল ধরণের সমস্যা সমাধানের পথ।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন প্যানেলটির প্রধান মিজানুর রহমান খান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৮ বছর ধরে যশোর চেম্বার অব কমার্সকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। অভিভাবকশূন্য প্রতিষ্ঠানটি আজ ব্যবসায়ীদের কাছে মৃত নদীর মতো। নির্বাচন করতে গেলেই প্রার্থীদের হয়রানি বা মামলার শিকার হতে হয়। এবারের নির্বাচনের আগেও আমাকে (মিজানুর রহমান খান) মিথ্যা মামলায় আটক করে ১৭ দিন জেলে রাখা হয়েছিল। বহু বছর পর এবারের নির্বাচন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ছিল। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে ভোটগ্রহণের মাত্র দুই দিন আগে মামলা করে নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। অবাক ব্যাপার হলো আমাদের প্রতিপক্ষ প্যানেলের প্রার্থীরা জেলা প্রশাসনের ভোট বন্ধের ঘোষণার আগেই সংবাদ সম্মেলন করে বৃহস্পতিবার ভোট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সাথে বলেছেন, ভুয়া ভোটার বাদ দিয়ে আবারও নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। যদি ভুয়া ভোটার থেকে থাকে তাহলে গত ৩ জানুয়ারি প্রশাসন দুই প্যানেলকে নিয়ে বসেছিলেন সেখানে কেন এই তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। মামালার বাদী মেহেদী কার সাথে চলাফেরা করেন তা সবাই জানেন। তবে আমরা বলতে চাই অবিলম্বে মামলাটি খারিজ করার উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে যশোর চেম্বারের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। আমাদের প্যানেল সব সময় ব্যবসায়ীদের পাশে ছিল, আগামীতেও পাশে থাকবে। আমরা আশাবাদী যশোর চেম্বারের কালো মেঘ কেটে গিয়ে সূর্য উকি দেবে।
ভুয়া ভোটার বাদ দিয়ে আবারও নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। যদি ভুয়া ভোটার থেকে থাকে তাহলে গত ৩ জানুয়ারি প্রশাসন দুই প্যানেলকে নিয়ে বসেছিলেন সেখানে কেন এই তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। মামালার বাদী মেহেদী কার সাথে চলাফেরা করেন তা সবাই জানেন। তবে আমরা বলতে চাই অবিলম্বে মামলাটি খারিজ করার উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে যশোর চেম্বারের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতা শেখ আতিকুর বাবু, সাজ্জাদুর রহমান সুজা, আবদুল হামিদ চাকলাদার ঈদুল, এহসানুর রহমান লিটু, কাসেদুজ্জামান সেলিম, শাহিনুর হোসেন ঠান্ডু, সায়েম সিদ্দিক, মকসেছদ আলী মুনলাইট, এজাজ উদ্দিন টিপু, খায়রুল কবীর চঞ্চল প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বুধবার শহরের মেসার্স পারভেজ ট্রেডার্সের মালিক মেহেদী হাসান (ভোটার নম্বর-৬৪২) যশোরের আদালতে ভুয়া ভোটারের অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলায় যশোর চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), নির্বাচন বোর্ডের আহ্বায়ক (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট), দুই সদস্য এবং আলম ট্রেডার্সের মালিক মো. আলম, সরোয়ার ট্রেডার্সের মালিক গোলাম সরোয়ার, রহিম স্টোরের মালিক আব্দুর রহিম ও যশোর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে। সিনিয়র সহকারী জজ সুজাতা আমিন স্থগিত আদেশ ও বিবাদীদের এক কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর বৃহস্পতিবার নির্বাচন বোর্ড কমিটির আহ্বায়ক ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার কেএম আবু নওশাদ যশোর চেম্বার অব কমার্সের ভোটগ্রহণ স্থগিতের ঘোষণা দেন।
২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল চেম্বারটির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে ব্যবসায়ী নেতা মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল বিজয়ী হন। ২০১২ সালের ৩ মার্চ মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি দায়িত্ব বুঝে পান। ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ওই বছরের ১২ জুলাই ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন ভেস্তে যায়। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব পালন করছে প্রশাসক।
১ Comment
Pingback: গবাদি পশু পরিপালনে কর্মসংস্থান বাড়ছে - দৈনিক কল্যাণ