প্রিয়ব্রত ধর, সুন্দলী (অভয়নগর): অভয়নগর উপজেলায় আতাই নদীর তীরে গড়ে উঠেছে দক্ষিণবঙ্গের বড় বাঁশের হাট। একে চন্দ্রপুর বাঁশের হাট নামে বলতেই এলাকার মানুষের বেশি পছন্দ।
স্বাধীনতার পর থেকেই এখানে শুরু হয় বাঁশ কেনাবেচা। আতাইয়ের সাথে নদীপথে নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট, মোংলা, সাতক্ষীরা ও ফরিদপুর জেলার সাথে রয়েছে সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে বাঁশ কিনতে আসে ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহে প্রতি বুধবার এখানে বাঁশের হাট বসে। হাটে চার থেকে পাঁচ হাজার বাঁশ বেচাকেনা হয়। নদীপথেই বাঁশগুলো এখানে আসে আবার নদীপথেই দূর-দূরান্তে চলে যায়।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দেশে বাঁশের বেশি ব্যবহার দেখা যায় পানের বরজে। কাঁচা, আধাপাকা ঘর নির্মাণে বাঁশের ব্যবহারের জুড়ি নেই। এছাড়া বেড়া তৈরি, মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ঘুনি, চারো, আরিংদা, চাই ইত্যাদি তৈরিতে বাঁশের ব্যবহার সমধিক। ইদানিং শিল্পকর্মে বাঁশের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সম্প্রতি হাটে গিয়ে দেখা যায়, আতাইয়ের পাড়ে বেশ বড় একটা মাঠ। নাম চন্দ্রপুরের মাঠ। মাঠের দক্ষিণে নদীর কুলঘেষে হাজার হাজার বাঁশের মেলা। কেনার ফাঁকে ফাঁকে ব্যবসায়ীরা সেগুলো গন্তব্যে নিতে ব্যস্ত। শ্রমিকরা বাঁশগুলো টেনে নদীতে বহমান সোতে ফেলে গাঁট বাঁধার কাজ করছেন। এক এক বোঝায় আড়াইশো থেকে তিনশো বাঁশ বেধে আতাই নদীতে রাখা ট্রলারের সাথে বেঁধে) দেয়ার কাজ চলছে। আবার কোনো কোনো ট্রলারের ওপরেও বাঁশ উঠাতে দেখা যায়।
সেখানে কাজ করছিল সম্রাট মল্লিক ও তালিপ মল্লিক নামের দুই শ্রমিক। সম্রাট বলেন, আমরা একাজে বাঁশপ্রতি তিন টাকা পাই। দিনে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করি।
চল্লিশজন ব্যাপারী আর ৩৫ জন শ্রমিক এখানে কাজের সাথে জড়িত।
হাটের ইজারাদার শাহিন খান বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে হাটটি বসছে। হাটে চার-পাঁচ হাজার বাঁশ বিক্রি হয়। হাটের আগের দিন থেকে শুরু হয়ে পরেরদিন পর্যন্ত এখানে ব্যস্ততা দেখা যায়।