সালমান হাসান
মাথায় ব্যালট বাকস। বুকে ঝুলছে প্যানাসাইন। সেগুলোয় নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন ও কার্যকর গণতন্ত্রের দাবির কথা। এছাড়াও ভোটের নির্বিঘ্ন পরিবেশ ও কার্যকর গণতন্ত্রের দাবির উল্লেখ রয়েছে। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। কেন্দ্রে গিয়ে শোনেন তার ভোট হয়ে গেছে। সেই যন্ত্রণা থেকেই অভিনব এমন প্রতিবাদ করে চলেছেন নোয়াখালির এক যুবক হানিফ বাংলাদেশি।
বুধবার সকালে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে তার দেখা মেলে। যশোরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে এখানে আসেন বলে জানান তিনি। স্মারকলিপিতেও নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন ও কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ৩৮টি জেলা ঘুরে এভাবে প্রতিবাদ করেছেন। সেখানকার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন। এবার করবেন নড়াইলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। ‘পুরান পাগলের ভাত নেই নতুন পাগলের আমদানি।’ কেউ কেউ বলেন সরকার বিরোধী। এসব ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ শুনেও তার প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া এমনও কথা বলতে শোনেন-বিএনপি-জামায়াতের হয়ে এসব কাজ করে বেড়াচ্ছেন।
তবে সুদূর জেলা নোয়াখালি মাইজদির এই যুবকদের ভাষ্য, তিনি কোন রাজনৈতিক দল ও তাদের মতাদর্শের অনুসারী নন। কারও হয়েও এই দাবি জানাতে মাঠে নামেননি। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার দুর্দশা ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে তার এই প্রতিবাদ। গত ৫০ বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারাই কলঙ্কিত করেছে।
তার দাবি, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সোবাহানিয়া আলীয়া মাদ্রাসায় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের কর্তব্যরতরা জানান তার ভোটও হয়ে গেছে। এছাড়া এখনও ভোট দিতে নানা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। যেমন: কাকে ভোট দিবেন, কিসে ভোট দিবেন। এছাড়াও গোপন ভোট অন্যের সামনে প্রকাশ্যে দিতে বাধ্য করা হয়। আর এই ক্ষোভ থেকেই এভাবে প্রতিবাদের চিন্তা তার। ৬৪টি জেলা ঘুরে প্রতিবাদ করবেন। প্রত্যেকটি জেলার ডিসির মাধ্যমে স্মারকলিপি রাষ্ট্রপতির কাছে দিবেন।
তার নাম আসলে মোহাম্মদ হানিফ। পেশায় তিনি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী। ঢাকার সেগুন বাগিচায় বর্তমানে বসবাস করেন। বিভিন্ন জেলায় এভাবে প্রতিবাদ করে বেড়ানোর এক পর্যায়ে তার নাম হয়ে গেছে হানিফ বাংলাদেশি।