নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল ভদ্রবিলা ইউপি চেয়ারম্যান সজিব মোল্লা ও প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত ৬ টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন না করেই বরাদ্দকৃত টাকা তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার খুলনার পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে নড়াইল জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছেন নির্বাহী অফিসার সাদিরা খাতুন।
অভিযোগে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে টিআর ও কাবিখার আওতায় নড়াইল সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদে ৬ টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ২৫ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এই ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নকালে চেয়ারম্যান সজিব মোল্লা এবং প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর হোসেন তাদের ইচ্ছামত পিআইসি নিয়োগ করে প্রকল্পগুলো খাতা কলমে বাস্তবায়ন দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা তুলে ভাগাভাগি করে নেন।
প্রকল্পগুলো হলো, শ্রীফলতা বেরীবাঁধ হতে বিল অভিমুখে রাস্তা মাটি দ্বারা উন্নয়ন। বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ লাখ টাকা। শ্রীফলতা ফুটবল মাঠে মাটি ভরাটের কাজে ৫ লাখ টাকা। চন্ডিতলা কবিখোলা মাঠে মাটি ভরাটের কাজে ২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। চন্ডিতলা পাকা রাস্তা হতে খেয়াঘাট অভিমুখে রাস্তার মাটি ভরাটের কাজে ৩ লাখ টাকা। চন্ডিতলা পাকা রাস্তা হতে আমিনুরের বাড়ি অভিমুখে মাটি দিয়ে রাস্তা ভরাট কাজে ১৬ মেট্রিক টন চাউল। এবং পলইডাঙ্গা কাজী শাহা মিয়া এতিম খানার সামনে মাটি ভরাট কাজে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সর্বমোট ২৫ লাখ টাকা।
এবিষয়টি জানতে পেরে ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদের সেবাগ্রহীতা জনগণের পক্ষে মতিয়ার রহমান ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর লিখিতভাবে বিষয়টি খুলনা বিভাগীয় কমিশনারকে জানান। অভিযোগটি গ্রহণ পূর্বক খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টির উপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৭ নভেম্বর নড়াইল জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। যার স্মারক নং ০৫.৪৪.০০০০.০০৪.০২.০০৮.২৩.৯০০।
তদন্তপত্রের প্রেক্ষিতে নড়াইল জেলা প্রশাসক গত ১৩ নভেম্বর তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেবার জন্য নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিরা খাতুনকে নির্দেশ দিয়েছেন। যার স্মারক নং ৫১.০১.৬৫০০.০০০.১৭. ০০২. ২১-৪৪৪। তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত চলমান আছে।
এখানেই শেষ নয়, চেয়ারম্যান সজিব মোল্লা ও তার সহযোগী প্যানেল চেয়ারম্যান আকবর হোসেনের যোগসাজশে বয়স্ক ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, বিধবা ভাতাসহ সরকারের বিভিন্ন অংশে অসহায়দের বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট করার অভিযোগ ও পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সজিব মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এগুলো আমার প্রতিপক্ষ লোকজন আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তাছাড়া ওইসব প্রকল্পে শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরই আমরা বিল পেয়েছি। পিআইও নাসরীন সুলতানা সরেজমিন তদন্ত করেই বিল ছাড় করেছেন।