সুন্দলী (অভয়নগর, যশোর) প্রতিনিধি: জলাবদ্ধতার সাথে চ্যালেঞ্জ করে কৃষকেরা অপেক্ষাকৃত ডাঙ্গা এলাকার বিলগুলো সেচে শুকিয়ে বোরো আবাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না এলাকার কৃষকেরা।
বর্তমানে ভবদহ অঞ্চলে প্রায় ৫২টি ছোট বড় বিল আছে। বড় বিলগুলো হলো বিল বোকড়, বিল খুকশিয়া, বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়া, বিল ডুমুর, বিল পায়রা ও দামুখালীর বিল। এসব বিলে অথৈ পানি। মাঝারি নিচু বিলে কোমর সমান পানি। এলাকার কৃষকেরা নিজেদের টাকায় পাম্প বসিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিল সেচে রোবো আবাদ করছেন। অনেক বিলে ধান রোপণের পর রোপণকৃত ধানের চারা পাশের পানির চাপে তলিয়ে যাচ্ছে। সে কারণে সারাক্ষণ পাম্প লাগিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মনিরাপুর উপজেলার কুচলিয়া, পাঁচকাটিয়া, কুমারসিমা, ভুলবাড়িয়া বিলের পানি পাম্প দিয়ে নিষ্কাশন করে বোরো চাষ করা হয়েছে। আবার ধান রোপনের পর পাশের পানি চুয়ে চুয়ে এসে চারা ডুবে যাচ্ছে। তার জন্য পাম্প লাগিয়ে সর্বদা সেচে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে।
অভয়নগর উপজেলার ঝিকরার বিল, শুড়িরডাঙ্গা বিল, মণিরাপুরের, ভুলবাড়ুয়া, বাহাদুরপুর বিল একই প্রক্রিয়ায় ধান চাষ করা হচ্ছে। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার ধোপাদীর বিল, সরখোলর বিলে পানি সেচে বোরো চাষের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সরখোলা বিলের কৃষক ইলিয়াজ হেসেন বলেন, আমাদের বিলের পানি সেচে শুকাতে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হবে। আমরা সমবায়ের ভিক্তিতে ওই টাকা সংগ্রহ করে পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশন করছি। এখন ধান চাষের শেষ সময় জানিনা এই সময়ের মধ্যে পানি শুকাতে পারবে কিনা।
বোরোর বীজতলা তৈরির সময় ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। বোরো ধানের চারা রোপণের সময়কাল পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়াারি। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাবিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা যায়। যশোরের ভবদহ অঞ্চলে গতবছর প্রায় চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরোচাষ হয়েছিল। বিল বোকড়, বিল খুকশিয়া, বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়া, বিল ডুমুর এবং বিল পায়রার ওপরের অংশ ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র দিয়ে সেচে বোরো ধান চাষ করেছিলেন কৃষকেরা।
বিলগুলোতে শুধু পানি আর পানি। বিলের কোথাও কোনো ধানখেত চোখে পড়েনি। বিলের পানিতে ভাসছে কেবল শাপলা আর আগাছা। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেন, ‘পনি সেচে জল শুকিয়ে লাখ লাখ টাকা খরচ করে এলাকার কৃষকেরা বোরো ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার এ ব্যপারেও কোন সহায়তা করছে না। এতে করে জনমনে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধছে।