অভয়নগর প্রতিনিধি
বেশি ভাড়া পেয়ে যশোরের অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক সুলতান আহম্মেদ জরুরি প্রসূতি রোগী ফেলে একজন সাধারণ রোগীর টেস্ট করার জন্য নিয়ে যান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকালে অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এ ঘটনা ঘটে। সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে ওই প্রসূতির গর্ভের সন্তান মারা গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
ওই প্রসূতির স্বামী আবদুল্লা আল মামুন জানান, আমার স্ত্রীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে বলি। সে তখন আমার কাছে এক হাজার সাতশত টাকা দাবি করে। কেন এত টাকা দেব বলতেই সে বলে, এর থেকে আমার বেশী টাকায় ভাড়া আছে। আপনার জন্য কম নিচ্ছি। আমি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলতে গেলে উনি বলেন ওটা আরএমও দেখেন ওনার কাছে যান। এরপর আমি বাইরের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে আমার স্ত্রীকে খুলনায় নিয়ে আসি। খুলানায় আনতে আনতে আমার স্ত্রীর গর্ভেন সন্তান মারা গেছে।
আরও পড়ুন:ইউপি মেম্বারের দেয়া জাল ওয়ারেশ কায়েম সনদ ধরা পড়লো আদালতে
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি কি. মি. দশ টাকা হারে আসা ও যাওয়া নির্ধারিত থাকলেও চালক সুলতানকে ১ হাজার ৫ শত টাকা না দিলে কোনভাবে সে যেতে চায়না। দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া খাটিয়ে চলেছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শংকরপাশা গ্রামের ওই প্রসূতিকে খুলনা মেডিকেলে যাওয়ার কথা বললে সুলতান ড্রাইভার একই আচরণ করে। এরপর ওই প্রসূতিকে না নিয়ে সুলতান ড্রাইভার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের ভাস্কর ঘোষ নামের এক শিক্ষকের স্ত্রীকে বাড়ি থেকে নিয়ে খুলনায় ডাক্তার দেখিয়ে আবার নিয়ে আসেন।
নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের ওই শিক্ষক ভাস্কর ঘোষ বলেন, অভয়নগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমি খুলনা টেস্ট করাতে গিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে অ্যাম্বুলেন্স চালক সুলতান আহম্মেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গাড়ির অনেক খরচ আছে যা সঠিকভাবে বিল করে পাওয়া যায় না। আমি এভাবেই ম্যানেজ করে চলি। এ বিষয়টা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্যারও জানেন।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ওই সময়ে তিনজন প্রসূতি রোগী থাকায় ড্রাইভার অন্য রোগী নিয়ে গেছে। তবে টাকা বেশী নেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, প্রসূতি রোগী বাদ দিয়ে অন্য রোগী নেয়ার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। টাকা বেশী নেয়ার কোন সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন:যশোরে নকল মবিল কারখানায় অভিযান