আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে বয়কটের মুখে পড়ছে ম্যাকডোনাল্ডস, কোকা-কোলা থেকে শুরু করে অ্যামাজন ও অ্যাপলের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হচ্ছে।
ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির সাথে যুক্ত ‘স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ’ গোষ্ঠী রোববার ভারত জুড়ে ছোট ছোট জনসভা করে। যেখানে সংগঠনটি মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড বয়কট করার আহ্বান জানায়।
ওই গোষ্ঠীর সহ আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘মানুষ এখন ভারতীয় পণ্যের দিকে তাকাচ্ছে। এর ফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে। এটা হলো জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের জন্য একটি ডাক।’
তিনি রয়টার্সকে তাঁর সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপে প্রচারিত একটি তালিকাও দেখান। যেখানে সাবান, টুথপেস্ট এবং ঠাণ্ডা পানীয়ের ভারতীয় ব্র্যান্ডগুলোর নাম দেওয়া আছে। যেন মানুষ বিদেশি ব্র্যান্ডের বদলে তা বেছে নিতে পারে।
সামাজিক মাধ্যমে ওই গোষ্ঠীর প্রচারে ‘বিদেশি ফুড চেইন বয়কট করুন’ শিরোনামে একটি গ্রাফিক ব্যবহার করা হয়েছে। যেখানে ম্যাকডোনাল্ডস এবং আরও অনেক ব্র্যান্ডের লোগো আছে।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল রাষ্ট্র ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। দেশটিতে মেটার হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহারকারী সবচেয়ে বেশি। ডমিনো’স এর রেস্তোরাঁর সংখ্যা অন্য যেকোনো ব্র্যান্ডের চেয়ে বেশি। পেপসি এবং কোকাকোলার মতো পানীয় দোকান দখল করে থাকে। নতুন অ্যাপল স্টোর খুললে বা স্টারবাকস ক্যাফে ছাড় দিলে মানুষের ভিড় লেগে যায়।
তবে বিক্রিতে এর প্রভাব পড়ার ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। তবে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর দেশি পণ্য কেনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বর্জনের জন্য সামাজিক মাধ্যম এবং অফলাইনে ক্রমশ আওয়াজ বাড়ছে।
বিষয়টি নিয়ে রয়টার্স প্রশ্ন করেছিল ম্যাকডোনাল্ডস, কোকা-কোলা, অ্যামাজন এবং অ্যাপলকে। তবে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর মেলেনি।
প্রসাধনী সামগ্রী ওয়াও স্কিন সায়েন্স এর সহ প্রতিষ্ঠাতা মনীশ চৌধুরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও বার্তা দিয়ে কৃষকদের এবং স্টার্টআপ সংস্থাগুলোকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। যেন ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সুপরিচিত হয়। এক্ষেত্রে দিনি দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের উদাহরণ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা হাজার হাজার মাইল দূরের পণ্যের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। আমরা গর্বের সঙ্গে এমন ব্র্যান্ডের জন্য পয়সা খরচ করেছি, যার মালিক আমরা নই। অথচ আমাদের নিজেদের দেশের উদ্যোক্তারা নিজ দেশে মনোযোগ আকর্ষণের জন্য লড়াই করছে।’
ভারতে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ড্রাইভইউ এর প্রধান নির্বাহী (সিইও) রাম শাস্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘চীনের মতো ভারতেরও নিজস্ব টুইটার/গুগল/ইউটিউব/হোয়াটসঅ্যাপ/এফবি থাকা উচিত।’
ভারতের রিটেল সংস্থাগুলো নিজ দেশে স্টারবাকস এর মতো বিদেশি ব্র্যান্ডগুলোর সাথে ভালো লড়াই করছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করাটা তাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।