নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের গন্ডি পেরিয়ে এবার আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত হলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক, দৈনিক কল্যাণের সম্পাদক ও প্রকাশক বীরমুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের বিভিন্ন কর্মকান্ডের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে এই সংবর্ধনায় ভূষিত করেছেন ভারতের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান তিতুমীর ফ্যান ক্লাব। সম্প্রতি সংগঠনটির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। তবে সাহসী কলম সৈনিকদের পথিকৃত একরাম-উদ-দ্দৌলা অসুস্থ থাকাতে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। সংগঠনটি তাদের প্রতিনিধি মারফত গত শনিবার সংবর্ধনা ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক পৌঁছে দেন। একরাম-উদ-দ্দৌলা এরআগেও সাংবাদিকতাসহ সমাজসেবা, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক নানান কর্মকান্ডের স্বীকৃতি হিসেবে সংবর্ধনায় ভূষিত হয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে ২০০৪ সালে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সাংবাদিকতার জন্য আহমেদুল কবির স্মৃতি স্বর্ণপদক লাভ।
ভারতের তিতুমীর ফ্যান ক্লাব প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা বলেন, ‘ভারতের স্বনামধন্য সংগঠন আমাকে সংবর্ধনায় ভূষিত করায় নিজেকে গর্বিত মনে করছি। আমার সকল কাজে যারা অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে এবং সঙ্গে ছিলেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
১৯৫২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাদুড়িয়া থানার কলিঙ্গা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে একরাম-উদ-দ্দৌলার জন্ম। পিতা মরহুম মোকছেদ আলী, মাতা মরহুমা আয়েশা খাতুন। তার পিতা ছিলেন ভারতের প্রখ্যাত ইংরেজি দৈনিক দ্যা স্টেটস্ম্যান পত্রিকার সহকারী সম্পাদক। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত হন। এ দেশের বরেণ্য সাংবাদিক মরহুম কবি নাসির উদ্দিন ও অন্যান্যদের সহচার্যে এসে সাংবাদিকতা পেশার প্রতি অনুপ্রাণিত হন তিনি। লেখাপড়ার পাশাপাশি মাসিক মুকুল, সাপ্তাহিক গণদাবি ও নতুন দেশ-এ সাংবাদিকতার হাতে খড়ি হয় তাঁর। পরবর্তীতে পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা। যোগ দেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদ-এর জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক গণকণ্ঠের মফস্বল সম্পাদক (গণকণ্ঠের প্রকাশনা বন্ধ হলে), সাপ্তাহিক সত্যকথা’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। পরবর্তীতে ফিরে আসেন যশোরে। দায়িত্ব নেন দৈনিক ঠিকানার নির্বাহী সম্পাদকের। দীর্ঘ ১৮ বছর যাবত সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে ১৯৮৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দৈনিক কল্যাণের সম্পাদনা ও প্রকাশনা শুরু করেন। অদ্যাবধি দৈনিক কল্যাণের প্রকাশনা অব্যাহত রয়েছে। দৈনিক কল্যাণ সম্পাদনা ও প্রকাশনার মতো কঠিন দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাকে অনেক প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবুও বিচ্যুত হননি তিনি। সাফল্যমন্ডিত প্রকাশনার ৩৭ বছরে দৈনিক কল্যাণ পেয়েছে যশোরের একমাত্র সরকার নিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের মর্যাদা এবং প্রকাশনার ৩৮ বছরে দৈনিক কল্যাণে যুক্ত হয়েছে সর্বাধুনিক ওয়েব প্রিন্টিং প্রেস।
সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। এই পেশার কৃতিত্বের জন্য জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। দেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।