কল্যাণ ডেস্ক: রপ্তানিমুখী সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ভারত থেকে সুতা আমদানি আরও সহজ করল জাতীয় রজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নতুন নিয়মে কাস্টম বন্ড লাইসেন্স প্রাপ্ত সব রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি করতে পারবে। এর আগে শুধু নিট পোশাক রপ্তানিকারকরা এবং ওভেন ও নিট ফেব্রিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেনাপোল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি করতে পারত।
এনবিআরের এ ঘোষণায় তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও স্থানীয় সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা মোটেই খুশি হতে পারেনি। এ সুবিধার আড়ালে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে সুতা আমদানির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজার হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করেন অনেকে। আবার আমদানি সুতার সঠিক মান ও পরিমাণ তদারকি বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি জানিয়েছন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
এনবিআরের এ আদেশের প্রসঙ্গে বাংলাদেশ টেক্সটাইলস মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন কালবেলাকে বলেন, দেশে তৈরি পোশাক খাতে যে পরিমাণ সুতার চাহিদা রয়েছে, তার প্রায় পুরোটাই স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে। যেজন্য বারবার বলা হচ্ছে বন্ডের সুতা যেন বাজারে আসতে না পারে। বন্দর খুলে দিলে বা আগের থেকে সহজ করলে বাজারে অবাধে সুতা আসবে।
আরও পড়ুন: বাড়ল স্মারক স্বর্ণ রৌপ্য মুদ্রার দাম
এতে স্থানীয় শিল্প ক্ষতির মুখে পড়বে। দেশের বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীদের একটাই দাবি, যাতে বন্দরগুলোতে এ ধরনের সুবিধা না দেওয়া হয়।
একই প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্পের নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালবেলাকে বলেন, আগে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি করা যেত। এখন সব বন্দর দিয়ে এ সুবিধা পাওয়া যাবে।
এতে পণ্য আমাদানি ব্যয় ও পণ্য খালাস সহজ হবে। আগে যেখানে ১ মাস সময় লাগত এখন অনেক কম লাগবে। ব্যবসায়ীদের এ নেতা জানান, সুতার মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ দেশে উৎপাদন হচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে অধিকাংশ ভারত থেকে আসে। তবে চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনাম থেকেও সুতা আমদানি হয়।
বর্তমানে দেশের বাজারে তৈরি পোশাকের প্রতি কেজি সুতার দাম ৩ ডলার ১০ সেন্ট। স্থানীয় বাজার ও আমদানি সুতার প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণত ভারতের সঙ্গে দেশের বাজারে প্রতি কেজি সুতার দামে ৫০ সেন্ট পার্থক্য না হলে ব্যবসায়ীরা আমদানি করেন না। এখন আমদানি সুবিধার কারণে স্থানীয় ও আমদানি বাজারে দামের একটি প্রতিযোগিতা হবে। এতে বাজার দর স্বাভাবিক থাকবে।
যেসব শর্তে ভারত থেকে এ চার বন্দর দিয়ে সুতা আমদানি করা যাবে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বৈধ বন্ড লাইসেন্স থাকতে হবে। বন্ড কমিশনারেট থেকে নির্ধারিত বার্ষিক আমদানি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে আমদানি করতে হবে।
ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে আমদানিযোগ্য হতে হবে। পণ্যের শুল্কায়নকালে ওজন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া দৈবচয়নের ভিত্তিতে পণ্যের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে। ইউডির বিপরীতে আমদানি সমন্বয়যোগ্য হতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু শর্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিটিআরসিকে ২৩৫৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে জিপি, রবি ও বাংলালিংকের: আপিল বিভাগ
১ Comment
Pingback: বিভিন্ন ব্যাংকের টাকা ধার নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে - দৈনিক কল্যাণ