ইলিয়াস উদ্দীন
রাত পোহালেই ভাষা শহীদদের স্মরণ করবেন দেশের মানুষ। কুয়াশা ভেদ করে যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীর ফুলের রাজ্যে কৃষকদের ফুলের হাট বসেছে। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের রাস্তার পাশে একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবস উপলক্ষে ফুল বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশের ফুলের রাজ্য খ্যাত যশোরের গদখালীতে এবার ভাষার শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে এমনটাই আশা করেছেন ফুল চাষিরা।
রোববার সকাল ৮ টায় সরেজমিনে গদখালী ফুলের বাজারে গিয়ে কথা হয় হাড়িয়া গ্রামের এরশাদ আলীর সাথে। তিনি বলেন আমি গ্লাডিউলাস ৭০০ পিস বিক্রি করেছি। প্রতি পিস ৮ টাকা দরে এবং চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩ টাকা দরে বিক্রি করেছি। কুলিয়া গ্রামের রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি দুই হাজার গোলাপ ফুল এনেছি প্রতি পিস ৭ থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করেছি। গদখালী ফুলের বাজারে পাইকারি ব্যবসায়ী মোমিন হোসেন বেপারী জানান, আমি পাকশী এবং ফরিদপুরে ফুল বিক্রি করে থাকি।
আরও পড়ুন:বাজার মনিটরিং জোরদারের নির্দেশ যশোরের ডিসির
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোলাপ ফুল প্রতি পিস ৮ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, জারবেরা ফুল ৮ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গাঁদা ফুল প্রতি হাজার ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বাসন্তী গাঁদা ফুল প্রতি হাজার ১ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে, রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৬ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, ভুট্টা রজনীগন্ধা প্রতি পিস ৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গ্লাডিউলাস হলুদ রঙের ফুল ১৫ টাকা পিস, সাদা রঙের ফুল ২০ থেকে ২২ টাকা পিস, পিংক রংয়ের ফুল ২০ থেকে ২৫ টাকা পিস, লাল ভ্যারাইটিজ ১০ থেকে ১১ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। জিপসি পাতা প্রতি আটি ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, কামিনী পাতা প্রতি আটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহীদ বেদীতে দেয়া ফুলের রিং তৈরির কাজ করেন পানিসারা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি ফুলের রিং বিক্রি করি প্রতিটি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায়। ফুল এবং রিংয়ের প্রকারভেদে এই দাম নির্ধারণ হয়। একাধিক ফুল চাষির সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের ফুলের বাজার বেশ ভালো এবং কৃষকরা অনেকটা ভালো দাম পেয়েছেন। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ফুলের দাম কমতে শুরু করেছে, এতে অনেক কৃষক কম মূল্য পেয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ৯ টায় বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি এবং যশোর ফুল বিপণন এবং বিক্রয় কেন্দ্রের সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবস উপলক্ষে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা রাখি।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, করোনা পরবর্তীকালীন সময়ে ফুল চাষিরা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, তারা ফুলের বাজার মূল্য পেয়ে খুব খুশি। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর ঝিকরগাছার গদখালী ফুলের বাজার থেকে ৫০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: যশোরে অপ্রতুল বরাদ্দ ওএমএস’র পণ্যের
