নিজস্ব প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক ৭ মার্চে গণসমাবেশে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল ভুলে সমাবেশ মঞ্চে একযোগে যোগ দেন বিবদমান দুই গ্রুপ। সোমবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসমাবেশ হয়। এতে দুই গ্রুপের নেতা সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ চার সংসদ সদস্যের উপস্থিতিতে দলীয় সব নেতাকে একই মঞ্চে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন দলের নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে ছিল উদ্দীপনা।
সমাবেশে বক্তৃতাকালে বক্তারা বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই নিজেদের দলীয় কোন্দল মিটিয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সকল ইউনিটকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। নেতাকর্মীদের বক্তব্যের পরে সংসদ সদস্যরাও তাদের বক্তব্যে আর ভেদাভেদ না, ঐক্যের সময় এসেছে। এই ঐক্য শুধু মঞ্চে না; থাকবে দলের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে। সংসদদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভেদাভেদ ভুলে স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগানে কর্মীরা মুখরিত করে তোলেন সমাবেশস্থল শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্বর।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলদার, যশোর-১ আসনের সংসদ আফিল উদ্দিন, যশোর সদর আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য্য।
সমাবেশে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দল পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ। এই দল জনগণের দল। জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে। তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে আজ আওয়ামী লীগ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে। আর এই উন্নয়নে ষড়যন্ত্র যেমন আগে ছিল, তেমনি এখনও আছে। আমরা বাতাসে এখনও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাই। এজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকলে আসছে জাতীয় নির্বাচনে আমাদেরকে কেউ পরাজিত করতে পারবেনা।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকের নির্দেশক্রমে আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ। ঐক্যের সময় এসেছে। আমাদের এই ঐক্য শুধু মঞ্চে না; রাজপথে-নির্বাচনে আর দলের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে।
অনুষ্ঠানে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না, যদি না নিজেরা নিজেদের পরাজিত না করি। শেখ হাসিনার উন্নয়নের বিরুদ্ধে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে, তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দলকে আরও আধুনিক ও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বর্তমানে যশোর জেলা আওয়ামী লীগে কোন বিভেদ নেই। শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তৃণমূল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে সবাই মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। যশোর-১ আসনের এমপি আফিল উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো এই দেশের মানুষ সুখি ও শান্তিতে থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের পরে তিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেও খুনি জিয়া ও তার দোষররা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিলো। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এই দেশ আরো পিছনের দিকে যেতে থাকে। সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে এই দেশের হাল ধরেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে। চারদলীয় জোটের জামায়াত বিএনপি এক হচ্ছে। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশে যশোরের সকল এমপি এখন ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যবদ্ধ থেকেই আমাদের তৃণমূলে পৌঁছাতে হবে।
যশোর-৩ আসনের সংসদ কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগে সামান্য রেষারেষি থাকলেও এখন আর তা নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী লীগের সকল উন্নয়ন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পৌছে দিতে হবে। তা না হলে বিএনপি জামায়াত শেখ হাসিনার উন্নয়ন যাত্রা ব্যাহত করবে। তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে এক সাথে মাঠে কাজ করতে হবে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুজিবুদ্দৌলা সরদার কনকের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যশোর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম, যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎ¯œা আরা মিলি, জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক শেখ জাহিদ হোসেন মিলন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বিপুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল প্রমুখ।