সালমান হাসান: টিকার লাইন যেমন লম্বা ভিড়ও তেমন ঠাসাঠাসি। জটলার মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর পর মিলছে টিকার সিরিয়াল। আর এত সমাগমেও নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই। যশোরে শিক্ষার্থীদের টিকাকেন্দ্রগুলোয় সামাজিক দূরত্ব মানছে না কেউ। মাস্কবিহীনও টিকার লাইনে দাঁড়াচ্ছে শিক্ষার্থীরা। নির্দেশনা থাকলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা হচ্ছে না টিকার কার্যক্রম। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা সতর্কতায় উল্লেখ রয়েছে এরকম নির্দেশনার।
রোববার যশোরে ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হয়। আট উপজেলার ১৪টি ভেন্যুতে অস্থায়ী টিকাকেন্দ্রে করোনার এই ভ্যাক্সিন কার্যক্রম চলে। এদিন কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে টিকা কেন্দ্র ঘুরে টিকাদানে স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘনের দৃশ্য দেখা যায়। টিকা কেন্দ্রগুলোর বাইরে পরিবেশ ছিলো রীতিমতন বিশৃঙ্খল। মাস্কবিহীন অনেক শিক্ষার্থী লম্বা লাইনে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে টিকা নেয়।
করোনা সতর্কতায় মাস্কের মত সোশ্যাল ডিসটেন্স বা সামাজিক দূরত্বও সমান জরুরি। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাটাও একটি স্বাস্থ্যবিধি। সামাজিক দূরত্ব না মেনে আক্রান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থান করলে সম্ভাবনা থাকে সংক্রমিত হওয়ার। যশোরের স্বাস্থ্যবিভাগে কর্মরতদের ভাষ্য অন্তত এরকমই। সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ^াস বলেন, মাস্ক পড়ার পাশাপাশি সোশ্যাল ডিসন্সে (সামাজিক দূরত্ব) মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে আসছি। শিক্ষার্থীদের টিকাদানে এটি যাতে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয় সেটি নিশ্চিত করা হবে। এব্যাপারে শিক্ষা কর্মকর্তাদের তাগিদ দেয়া হবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, যশোরের আড়াই লাখ শিক্ষার্থীকে করোনার টিকার আওতায় আনা হচ্ছে। এপর্যন্ত ৯৯ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকাদান সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ টিকাদান সম্পন্ন হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম আযম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা যাতে টিকা নেয় তার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। টিকা কার্যক্রমের সময়াস্কের ব্যাপাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। টিকা দিতে আসা প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পড়তে হচ্ছে।
গতকাল যশোর জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামে ২০টি স্কুল-মাদ্রাসার প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়। ফলে টিকা নিতে আসা শিক্ষার্থীর ভিড়ে অডিটোরিয়ামটির সামনের অংশে ভিড় জমে যায়। জটলার মধ্যে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রটি থেকে টিকা নেয়। তবে পরবর্তীতে সারিবদ্ধ করানো হলেও শিক্ষার্থীরা গা-ঘেষাঘেষি করে দাঁড়ায়। ভিড়ের মধ্যেও অনেকের মুখে মাস্ক ছিলো না। এছাড়া অডিটোরিয়ামে টিকার বুথে ঢোকার আগে কাগজপত্র দেখানোর সময়ও জটলা করে শিক্ষার্থীরা। তখনো কেউ কেউ ছিলো মাস্কবিহীন অবস্থায়। জেলা স্কুল অডিটোরিয়াম কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন মাস্ক পড়ে থাকে সেটি নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। আর বাচ্চারা কথা একটু কম শোনে। শিক্ষকরা একটু সরে গেলে তারা সারি ভেঙে জটলা করছে।