গাজী মইনুল ইসলাম লাল্টু, নেহালপুর (মণিরামপুর)
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়নের সুজাতপুর থেকে ডহরমশিয়াহাটী পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে অতি নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করায় এলাকাবাসী কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পরে ফের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।
শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদার গোপন আলাপ আলোচনা করে নির্মাণ কাজ করছেন বলে কেউ কেউ দাবি করেছে। স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ফেলতে শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন। এ সময় স্থানীয়রা প্রথমে ট্রাক ড্রাইভার ও ঠিকাদারের লোকজনকে বিষয়টি অবহিত করেন। কিন্তু তারা কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি। শুক্রবার সকালে ওই রাস্তা ৬ ইঞ্চি উচ্চতার কাজ শুরু করেন ঠিকাদারের শ্রমিকরা। এ সময় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ওই নিম্নমানের খোয়া দেয়া বন্ধ করে দেন এবং বিষয়টি প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে জানালে বিষয়টি ঠিকাদার চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায় সেগুলো নিম্নমানের খোয়া। এ সময় ঠিকাদার তার ম্যানেজারকে নিম্নমানের খোয়া তুলে ফেলতে বললেও অজানা কারণে সেটি না তুলেই রাস্তায় ব্যবহার করেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের আওতায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে মণিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর থেকে ডহরমশিয়াহাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ ফুট প্রস্থ রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব পান আনন্দ বিশ্বাস নামে এক ঠিকাদার। গত শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজে ১ নং ইটের খোয়ার স্থানে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করছে। বিষয়টি দেখে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ঠিকাদার। সুজাতপুর গ্রামের সঞ্জিত মন্ডল বলেন, দীর্ঘ এক যুগ পর এই রাস্তা নির্মাণ কাজ হচ্ছে। নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে। রাস্তাটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না। আমরা এলাকাবাসী সকালে এসে নিম্নমানের খোয়া ফেলছে দেখে প্রতিবাদ করি। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য বিদ্যুৎ বৈরাগী বলেন, ঠিকাদার শ্রমিক দিয়ে নিম্নমানের খোয়া তুলে রাস্তার পাশে রেখে গোপনে তা আবার রাস্তায় ব্যবহার করছে এবং টাকা দিয়ে স্থানীয় কিছু লোক ম্যানেজ করছে বলে আমরা জেনেছি। আমরা এলাকাবাসী মানববন্ধন করবো।
এদিকে ঠিকাদার আনন্দ বিশ্বাস বলেন, দুই একটা গাড়িতে নিম্নমানের খোয়া এসেছে পরবর্তীতে আর আসবে না। মণিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি, নিম্নমানের ইটের খোয়ার ছবি দেখেছি। ঠিকাদারকে ওই খোয়া ব্যবহার না করার জন্য বলেছি। এরপরও যদি নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করে তাহলে ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
