নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর
যশোরের মণিরামপুরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের কাজ শেষ হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে। এখনো কোন শ্রমিক কাজের মজুরি পাননি। নিয়ম অনুযায়ী ২০ দিনের কাজ শেষ হলে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের কথা। কিন্তু ৪০ দিন কাজ শেষ করেও এ অঞ্চলের শ্রমিকরা টাকা না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের ১১ নভেম্বর কর্মসূচির মাটির কাজ শুরু হয়ে চলেছে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। এই মৌসুমে ৪০ দিন কাজ হয়েছে। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে ৪৬ প্রকল্পে ১ হাজার ৯৫৬ জন শ্রমিক কাজে অংশ নিয়েছেন। শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা। আর দলনেতাদের দৈনিক মজুরি ৪৫০ টাকা।
শ্রমিকরা বলছেন, ‘মজুরির টাকা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে। আমন ধান কাটার মধ্যে মাটি কাটার কাজ চলে। এর কারণে রাস্তার কাজ ফেলে আমরা অন্য কাজ করতে পারিনি। এখন কাজ শেষে। তবে এখনও টাকা পায়নি। চেয়ারম্যান মেম্বরের কাছে যাচ্ছি। কবে টাকা পাব তারা বলতে পারে না। আমরা খুব কষ্টে আছি’।
উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের শ্রমিক জীবন মন্ডল বলেন, কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগে। একটা টাকাও পাইনি। কর্মসূচি কাজের টাকায় মেয়ের লেখাপড়া; সংসার চলে। এখন বাজার করে খাওয়ার টাকা পর্যন্ত নেই। ধার দেনা করে কষ্টে দিন যাচ্ছে।
রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, ইউনিয়নে কর্মসূচির শ্রমিক আছে ১৩৯ জন। কাজ চলা অবস্থায় ২০ দিনের বিল করে পিআইও অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে। গেল সপ্তাহে শেষের ২০ দিনের বিলও জমা দিয়েছি। কোন শ্রমিক এখনো মজুরি পায়নি। পিআইও অফিসে যোগাযোগ করে কাজ হচ্ছে না। শ্রমিকরা এসে টাকার বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। তাদের সঠিক কিছু বলতে পারছি না।
মণিরামপুরে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ দেখভাল করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার। তিনি বলেন, আমরা ২০ দিনের বিল করে ঢাকায় অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। গত সপ্তাহে যোগাযোগ করেছি। চলতি সপ্তাহে শ্রমিকদের মোবাইল একাউন্টে টাকা ঢোকার কথা ছিল। এখনো কেউ টাকা পায়নি।
গোলাম সরোয়ার বলেন, এবার ৪০ দিন কাজ হয়েছে। চেয়ারম্যানরা শ্রমিকদের কাজ শেষের ২০ দিনের বিল জমা দিয়ে গেছেন। বিল দ্রুত ঢাকায় পাঠানো হবে। ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের কাজের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন। শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ২০ দিনের বিল অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এখনো বরাদ্দ দেয়নি। আমরা যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।