কেশবপুর প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে সরকারি নিয়োগ বিধি লঙ্ঘনসহ বয়স জালিয়াতি করে আজিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে মধুশিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন নিজেই বয়স কমিয়ে অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ দিয়ে এ নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এ নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগের দাবিতে এলাকাবাসীর পক্ষে শামছুর রহমান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালকসহ প্রশাসনের একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেছেন।
কেশবপুর শহরের পাবলিক ময়দানের পাশে অবস্থিত মধুশিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সৃষ্টপদ পূরণের লক্ষ্যে বিধিমোতাবেক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সরকারের সর্বশেষ নিয়োগ বিধিতে উল্লেখ রয়েছে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হতে হবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন সরকারি নিয়োগ বিধি লঙ্ঘনসহ বয়স জালিয়াতি করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ওই পদে মূলগ্রামের আজিজুর রহমানকে নিয়োগ দেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন নিজেই তার প্রতিষ্ঠানের প্যাডে আজিজুর রহমানের বয়স কমিয়ে অষ্টম পাশের সনদ দেন। যা ভোটার তালিকা ও জন্মনিবন্ধন সনদের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। মধুশিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাওলানা সুলতান আহম্মেদ বলেন, চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন অবসরে যাওয়ার আগেই আজিজুর রহমানকে প্রতিষ্ঠানে যোগদান করান। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মূলগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীন ইসলাম বলেন, ১৬/০১/১৯৯৪ তারিখে আজিজুর রহমান তার বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। বিদ্যালয়ের ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ- ১২/১২/১৯৮২। আমি তাকে টিসি দেয়নি। মধুশিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিভাবে তাকে অষ্টম পাশের সনদ দিল তা আমার বোধগম্য নয়। শুধু তাই নয়, উপজেলা নির্বাচন অফিসের ভোটার তালিকার ৫৯৭ নম্বর সিরিয়াল অনুযায়ী আজিজুর রহমানের ভোটার নম্বর- ৪১১৬৩৯৩৬৬২০৫। জন্ম তারিখ- ১০/০৮/১৯৮২। তার বর্তমান বয়স ৪০ বছর।
আবেদনকারী শামছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আজিজুর রহমানের জাতীয় পরিচয় পত্রের বয়সের সাথে অষ্টম পাশের সনদে বয়সের গরমিল থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাঠানো তার বেতন ভাতাদির কাগজপত্র যশোর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে ফেরৎ পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে মধুশিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, বিধিমোতাবেক আজিজুর রহমানের নিয়োগ হয়েছে। তার বয়স ভুল সংশোধনের আবেদন করে কমানো হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠানে সে পড়াশুনা করতো। তাই অষ্টম পাশের সনদ দেয়া হয়েছে। সে মোতাবেক তার কাগজপত্র তৈরি করে বেতন ভাতাদি ধরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রশিদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। তবে অভিযোগটি খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক বরাবর করা হয়। এ বিষয়ে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি তারাই দেখবেন।
আরও পড়ুন: এমপি কাপ ফুটবলের ফাইনালে কালীগঞ্জ