নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীনতা আর শেখ হাসিনা দিলেন দেশের উন্নয়ন। এদেশে যা কিছু অর্জন সবকিছু আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে। সেই উন্নয়নকে অস্বীকার করছে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র। আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমানে জামায়াত বিএনপি মাথা চড়া দিয়ে দেশ-বিদেশে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। তাই সময় হয়েছে সকল দ্বন্দ্ব ভুলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। শুক্রবার বিকালে যশোর শহরের ভৈরব চত্বরে আওয়ামী লীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুর থেকে সদর ও পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ ব্যান্ড পার্টির বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থল ভৈরব চত্বরে জড়ো হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘দেশে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র। যারা দেশের উন্নয়নকে বিশ্বাস করে না; যারা দেশের স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেনি, তারাই এই ষড়যন্ত্র করছে। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে। আমরাও প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের সাংগঠনিক গতিশীল করছি। মনোনয়ন, পদ পদবি নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিভেদ-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবেন না। নেত্রী যাদেরকে মনোনয়ন দিবেন তাদেরকেই বিজয়ী করতে আমরা লড়াই করবো। সময় এসেছে সকল বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। এই আওয়ামী লীগকে কেউ পরাজিত করতে পারবে না।
সমাবেশে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘বিএনপি বলছে ঈদের পরে সরকার পতনের দফা দিবে। আমরা তাদের সেই দফা প্রত্যাখ্যান করলাম। দফা-আন্দোলন-দাবির নামে যদি আবার ২০১৪ সালের মতো আগুন সন্ত্রাসী কর্মকা-ে লিপ্ত হয় বিএনপি, তাদের কর্মকা-ে সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় ; তাহলে যশোরে কোন বিএনপি নেতাকর্মী থাকতে পারবে না। কোন আগুন সন্ত্রাসী চলবে না। বিএনপিকে রুখে দিতে আওয়ামী লীগের কোন জোটদল লাগবে না। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে তাদের রাজপথে জায়গা হবে না। আওয়ামী লীগই পারে সকল সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্ন দেখায় না; স্বপ্ন বাস্তবায়নও করে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি তালবাহেনা করছে। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হয়েছে, যারা নির্বাচনে যাবেন সেই ট্রেনে উঠে পড়ুন। তা না হলে ট্রেনের নিচে পড়ে মারা যাবেন। বিদেশীদের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোন লাভ হবে না। বাংলাদেশ যখন উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছে, বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বিদেশীরা গবেষণা করছে তখন সেই সময়ে বিএনপি সমালোচনা করছে ষড়যন্ত্র করছে।
নিজ দলের নেতাকর্মীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে, সবাই কিন্তু সিগন্যাল পাচ্ছে। জামাত বিএনপির ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার সিগন্যাল। আপনারা যারা মনে করছেন এবারও আমার মনোনয়ন ফাইনাল, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। এই তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ফাইনাল খেলবে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের তথ্য ভালোবাসায় নেত্রী মনোনয়ন দিবে। আপনারা যারা জনপ্রতিনিধি হয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর নেন না, ভালোবাসার সময় ভালোবাসেন নাই। ভোটের সময় খোঁজ নিবেন। তা হবে না। নেত্রী যাচাই বাছাই করছে। জনগণের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ ছিলো, তৃণমূল নেতাকর্মীদের যারা খোঁজ খবর নিয়েছে; তাদেরকে নেত্রী মনোনয়ন দিবেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহমুদ হাসান বিপুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন যশোর পৌরসভার মেয়র মুক্তিযুদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা আওয়ামী লীগনেতা মোবাশে^র হোসেন বাবু, সদস্য সামির হোসেন পিয়াস, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোৎস্না আরা মিলি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, যশোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর কবির সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি এস এম নিয়ামত উল্লাহ। এছাড়া সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগ, সদর ও পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের নেতৃত্বে এই শোভাযাত্রা সমাবেশ স্থল থেকে বের হয়ে চৌরাস্তাতে যেয়ে শেষ হয়। এর আগে দলটির ৭৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে শহরের গাড়ি খানাস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকার সঙ্গে দলীয় প্রতাকা উত্তোলন, বকুলতলাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দদের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং দুপুর ১২ দলীয় কার্যালয়ে কেক কাটা হয়। এসব কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
