শেখ এনামুল হক দুলু, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ইটের ভাটায় কয়লা দিয়ে ইট পোড়াতে হবে, কাঠ পোড়ানো যাবে না, সরকারের এমন কঠোর আইন থাকলেও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামে এক ইট ভাটার রয়েছে করাতকল। এই করাতকল থেকে কাঠ কেটে ভাটাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এই অবস্থা দীর্ঘ কয়েক বছর চললেও কারো কোনো পদক্ষেপ নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যে মতে মহেশপুরে ২২টি ইট ভাটা রয়েছে যার মধ্যে ২টি ভাটার লাইসেন্স রয়েছে।
ইট ভাটাগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের মতে মহেশপুর উপজেলায় প্রায় ২২টি ইট ভাটা রয়েছে। প্রতিটি ইটভাটায় বছরে ৪৫ থেকে ৫০ লাখ ইট তৈরি করে। আর এই পরিমাণ ইট পোড়াতে অবৈধ ও ব্যারেল চিমনীর ভাটা গুলোতে কাঠের ব্যবহার করতে হয় হাজার হাজার মণ কাঠ।বিপুল পরিমাণ কাঠের সবই কাঠুরে দিয়ে দূর থেকে ফাঁড়াই করে আনতে হয়। এই কারণে রাফি ব্রিকস্ ভাটার সঙ্গেই করাতকল স্থাপন করে নিয়েছেন। এই করাতকলে কাঠ কাটা হচ্ছে আর ভাটাই ব্যবহার হচ্ছে।
উপজেলার পদ্মপুকুর-শ্যামকুর সড়কের পাশে পদ্মপুকুর গ্রামের মাঠে বিশাল জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত রাফি ব্রিকস্। এই ভাটায় গোটা এলাকা জুড়েই রাখা হয়েছে কাঠ আর কাঠ। নানা প্রজাতির বড়-ছোট গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। ভাটাটির দক্ষিণ পাশে বসানো হয়েছে করাতকল। করাতকলের চারিপাশে কাঠের স্তুপ। এই করাতকলে কাঠ ফাঁড়াই করা হচ্ছে আর তা ফেলা হচ্ছে ভাটায় চুলায়। জ্বালানি হিসেবে কাঠই তাদের ভরসা।
বেশ কয়েক বছর এরা এভাবে ভাটার সঙ্গে করাতকল রেখে সেটাতে কাঠ কেটে ভাটায় ব্যবহার করছেন। প্রতি বছরই হাজার হাজার মণ কাঠ ব্যবহার করা হয়।এই ভাটাগুলোর মালিক তারা স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন না। যে কারণে তারা বড় বড় গাছ কেটে নিজেদের প্রয়োজন মতো ফাঁড়াই করে চুলায় ব্যবহার করছেন।
ভাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাফি ব্রিকসসহ অধিকাংশ ইট ভাটা কাঠের উপর নির্ভর করেই চলছে। এখানে কয়লার ব্যবহার হয় না। একটি ভাটায় বছরে আনুমানিক ৫০ হাজার মন কাঠের প্রয়োজন হয়। যা বিভিন্ন মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। তিনি আরো জানান, এই গাছ ইচ্ছামতো ফাঁড়াই করে ভাটায় ব্যবহারের সুবিধার জন্য ভাটার সঙ্গেই করাতকল বসিয়ে নিয়েছেন রাফি ব্রিকস ।
এ ব্যাপারে রাফি ব্রিকস্ এর মালিক ও ইটভাটা সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন জানান, কাজের সুবিধার্থে সব কিছুর প্রয়োজন সে কারণে করাত কলটিও রাখা হয়েছে। এর আগে অনেকে এসেছিলো ছবি তুলে নিয়ে গেছে, কিন্তুু কিছুই করতে পারেনি, আপনিও ছবি তুলে নিয়ে যান।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন,আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি,তবে অবৈধ্য ইট ভাটা গুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।