নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে মাংস ব্যবসায়ীকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টাকালে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে অবরুদ্ধ করে মারপিট করেছে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা পরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের বড় বাজার কাঠেরপুল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, কোতোয়ালি থানা পুলিশের কনস্টেবল শিশির ও সদর ফাঁড়ি পুলিশের কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শহরের বিভিন্নস্থানে মাদক বিক্রেতাসহ নানা ধরণের অপরাধীদের সাথে গাটছড়া বেধে চলে আসছিল। ফলে ওই সকল অপরাধীর কাছ থেকে তারা সুবিধা ভোগ করছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বড় বাজার কাঠেরপুল এলাকার শামিম হোসেনের মাংসের দোকানের উপরে একটি পাইপের মধ্যে এক সোর্সের মাধ্যমে ইয়াবা রেখে দেয় ওই দুই কনস্টেবল। সোর্সের রাখা সেই ইয়াবা উদ্ধারের নামে এদিন দুপুর ১২টার দিকে কনস্টেবল শিশির ও আনোয়ার শামিমের দোকানে যায়। কনস্টেবলেরা সেই পাইপের মধ্যে থেকে ইয়াবা উদ্ধার করে। এসময় ব্যবসায়ী শামিমকে তারা আটকের জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু শামিম ওই ইয়াবা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান। তবে চোরে না শোনে ধর্মের কানিহীর মত ঘটনা ঘটতে শুরু করে। ফলে দুই কনস্টেবল তাকে আটকের জন্য চেষ্টা করেন। এসময় সেই সোর্সের ইয়াবা রাখতে দেখা এক যুবক এসে বলছে ইয়াবা তো ওই সোর্স রেখেছে। আপনারা কেন মাংস ব্যবসায়ীকে আটক করছেন ? এরপর থেকে শুরু হয় বিক্ষুদ্ধ জনতার পুলিশের উপর আক্রোশ। কেউ কেউ তাদের কয়েকটি চড়থাপ্পড় মেরেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে গণপিটুনি ও অবরুদ্ধের কথা তারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জানায়। ফলে সেখানে হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল হোসেনসহ ডিবি পুলিশের কয়েকটি টিম। এরপর তাদের দু’জনকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহলের বক্তব্য মতে কনস্টেবল কোন অভিযান চালাতে পারেনা। কিন্তু তারা ব্যক্তি লাভের আসায় এদিন সেখানে সোর্সের মাধ্যমে ইয়াবা রেখে একজন নিরীহ ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
এই ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল হোসেন বলেছেন, দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে তা সঠিক নয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেছেন, মাংস ব্যবসায়ী শামিমের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে একটি দ্রুত বিচার আইনের মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিনের ঘটনায় তদন্ত করে দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।