দেলোয়ার কবীর, ঝিনাইদহ
যশোর কৃষি অঞ্চলের ছয় জেলার চাষিদের দুঃখ ঘোচাবে এবারের শীতকালীন সবজি। এবার নেই অতিবৃষ্টি, ঝড়, পোকার ব্যাপক আক্রমণ আর রোগের প্রকোপ। ফলে এখন পর্যন্ত অনায়াসেই তারা তুলছেন শীতের সবজি যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। এমনটাই আশা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। চাষিরা এবিষয়ে একমত পোষণ করছেন। যশোরের বাঘারপাড়ার বন্দবিলা, খাজুরা, নিমটা, কোটরাকান্দি ও আশেপাশের এলাকার সবজিচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার অনুকুল আবহাওয়ার কারণে সিম, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, পালং, লাউ ইত্যাদি শীতকালিন সবজি ভালো ফলতে শুরু করেছে। মাঠেমাঠে শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ।
সবজিচাষি মোহাম্মদ আলি, মোমরেজ শেখ ও আনন্দমোহন জানালেন, মাসদেড়েক আগে তারা শীতের সবজির আবাদ শুরু করেন। অনেকেই ইতোমধ্যে সব রকমের সবজিই কিছু না কিছু তুলতে শুরু করেছেন। বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তা বেশ ভালো। এতে তাদের উৎপাদন খরচ উঠেও কিছুটা লাভের দেখা পাওয়া যাবে । মৌসুমে যদি অতিবৃষ্টি, ঝড়, পোকার ব্যাপক আক্রমন আর রোগের প্রকোপ না থাকে, তারা ক্ষতি থেকে নি:সন্দেহে রেহাই পাবেন বলে মনে করছেন।
চলতিমৌসুমে ৫২ হাজার ৭৯৩ হেক্টরে হেক্টরপ্রতি ২৩.৪৪ টন হিসেবে ১২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩২৫ সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য। এ অঞ্চলে গতমৌসুমে হেক্টও প্রতি ২৩.৩৭ টন হিসেবে ৫২ হাজার ৬৭৫ হেক্টরে মোট ১২ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৩৯ টন সবজির আবাদ হয়েছে। এবার নেই অতিবৃষ্টি, ঝড়, পোকার ব্যাপক আক্রমন আর রোগের প্রকোপ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিসের সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে তারা মোট ৫২ হাজার ৭৯৩ হেক্টর জমিতে হেক্টরপ্রতি ২৩ লক্ষ ৪৪ টন হিসেবে ১২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩২৫ সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য ধার্য করেন। এর মধ্যে যশোর জেলায় ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টরে, ঝিনাইদহে ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৩ হেক্টরে, মাগুরায় ৩ হাজার ৬৩৯ হেক্টরে, কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৬৫০ হেক্টরে, চুয়াডাঙ্গায় ৮ হাজার ৪১০ হেক্টরে এবং মেহেরপুরে ৪১ হাজার ৯১০ হেক্টরে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ওই অধিদপ্তর। গতমৌসুমে এই ছয় জেলার চাষিরা তাদের ৫২হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমিতে হেক্টরপ্রতি ২৩.৩৭ টন হিসেবে মোট ১২ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৩৯ টন সবজির আবাদ করেছেন।
অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক আবু হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুরের চাষিরা বরাবরই সবজি আবাদে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। তার মতে, যেহেতু সারা সারাবছরই সবজির দাম ভালো পাওয়া যায়, যশোর অঞ্চলের চাষিরাও তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সবজির চাষ বেশি করতে আগ্রহ দেখান। অনুকুল পরিবেশে এবার সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি ধারণা করছেন। যশোর অঞ্চলের চাষিদের স্বার্থ সংরক্ষণে তাদের সবরকম পরামর্শ ও সহযোগিতা দিতে মাঠপর্যায়ের সব কর্মকর্তাকে নির্দেশণা দেয়া হয়েছে বলে জানালেন অতিরিক্ত পরিচালক আবু হোসেন।