২০ মার্চ রাতে সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবর্তন যশোরের কর্মীদের ওপর হঠাৎ মাদকসেবীরা হামলা চালিয়েছে। বিবর্তনের সাধারণ সম্পাদক জানান, সংগঠন কার্যালয়ের পেছনের অংশ বিগত কয়েক বছর আগে অদিতী ক্রিড়া চক্রের কাছে ভাড়া দেয়া হয়। কিন্তু সেখানে এখন মাদকের আঁখড়া হয়ে গেছে। অতিরিক্ত নেশা করে মাদকসেবীরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। কি হয়েছে জানতে চাইলে একপর্যায়ে তাদের সাথে হাতাহাতি হয়। পরে কোতোয়ালি থানা থেকে একটি মোবাইল টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকার ও প্রশাসন জিরো টলারেন্স। আর এ কারণে আইন-শৃংখলা বাহিনী এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর মাদকের বিরুদ্ধে সর্বদা সতর্ক রয়েছে। প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ীরা ধরাও পড়ছে। কিন্তু তারপরও কেন এ ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না তা আজ ভাববার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের এমন কোনো কর্মকর্তা নেই যিনি মাদকের বিরুদ্ধে দু-পাঁচটা কথা বলেন না? এমন কোনো ওসি নেই যিনি মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেননি? তারা শুধু বলেই খালাস নয়, মাদকের বিরুদ্ধে আন্তরিকতার সাথে কাজও করছেন। তার পরও ফলটা কি?
তাহলে কি চোরা পথে আসা মাদকে দেশ ভাসছে? বিভিন্ন সময় ইয়াবা ধরা পড়েছে, আর ফেনসিডিল, হেরোইন, মদ গাঁজার তো স্রোত বয়ে যাচ্ছে। কোথা থেকে কি হচ্ছে, কেনইবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতার পরও চোরাচালানীরা নিবৃত হচ্ছে না এটা ভাবলে মাথা বিগড়ে যাবার কথা।
নেশার কালো থাবা এমনভাবে মানুষকে গ্রাস করে যে নেশাসক্ত নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। জীবন তাদের কাছে হয়ে ওঠে তুচ্ছ। মরবে কি বাঁচবে সে জ্ঞান তাদের থাকে না। আর ধর্ম জ্ঞান সে তো অনেক দূরের বিষয়। তারা সব সময় মানসিক উচ্ছৃঙ্খলা, অবসাদ ও বিষন্নতায় ভোগে।
সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থান গ্রহণ করলেও ফল কিন্তু সন্তোষজনক নয়। যশোরে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর হামলা তারই প্রমাণ বহন করে। বিবর্তন কার্যালয় কোতোয়লি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থিত। কিন্তু মাদক সেবীরা সেটা মোটেই পরোয়া করে না। পুলিশও জানে না সেখানে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে।
এ ব্যবসাকে ডেডস্টপ করতে হবে। এদের যদি দমন করা যেত তা হলে এতদূর এগোতে পারতো না। বিকশিত হবার আগেই হারিয়ে যায়, কত উদীয়মান প্রতিভা। বিধবা হয় কত নারী, কত শিশু এতিম হয়। মাদকাসক্তরা পরিবার সমাজে অস্বাভাবিক জীবনযাপনের শিকার হয়। আর এতে সমাজে অস্থিরতা দেখা দেয়।