কল্যাণ ডেস্ক
আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়কারী নুরুজ্জামান কাফির বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাফি নিজে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে কলাপাড়ায় থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
কাফি তার মামলার আবেদনে উল্লেখ করেছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ফ্রন্টলাইনে থেকে তিনি আন্দোলনকে তরান্বিত করেছেন। সর্বশেষ ধানমন্ডি ৩২ এ স্বৈরশাসকের গুমের আস্তানা ধ্বংসে জনগণের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন তিনি। যার কারণে স্বৈরশাসকের সহযোগীদের টার্গেটে পরিণত হন। যার ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় স্বৈরাচারের অজ্ঞাত সহযোগীরা ওত পেতে তার বসতঘর, রান্নাঘর, গরুর ঘরসহ আশপাশের সবকিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কথা বলতে গিয়ে তার পরিবারের এমন সর্বনাশ করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কাফি আরও উল্লেখ করেছেন, আমার ঘরের মধ্যে থাকা চার মাস বয়সী বাচ্চা, চার বছর বয়সী ভাতিজা, মা-বাবা, ভাই-ভাবি ছিল। সকলকে ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে দরজা রশি দিয়ে বেঁধে ঘরের চারোদিক থেকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে পরিবারের সবাই কোনোমতে দরজা ভেঙে প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু ঘরসহ সকল জিনিসপত্র, কাগজপত্রসহ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস টিম গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়।
এদিকে কাফি প্রধান উপদেষ্টাকে উল্লেখ করে বলেন, ‘আজ আমার বাড়ি পোড়ানো হয়েছে। কালকে আপনার বাড়ি যে পোড়ানো হবে না, তার কোনো গ্যারান্টি নাই। আমি দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বলছি, এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী খুঁজে বের করতে সক্ষম হবেন। সেই সঙ্গে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা ও সাধারণ জনগণের এবং ধানমন্ডি ৩২ এ যেসব বিপ্লবী জনতা ছিল, তাদের নিরাপত্তা একান্ত প্রয়োজন।
এছাড়া তিনি আগামী ৭দিনে এসব দাবি পূরণের জন্য আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, ‘এর মধ্যে দোষীদের ধরা না হয় কিংবা তার পুড়ে যাওয়া ঘর পুনর্গঠন না করা হয়, তাহলে তিনি একা রাজপথে দাঁড়াবেন। একাই লড়ে যাবেন। প্রয়োজনে বিপ্লবী সরকারের ডাক দিবেন।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া কলাপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে নুরুজ্জামান কাফি। বিষয়টি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বাইরে থেকে দরজা আটকে দুর্বৃত্তরা কাফির বাড়ি পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন কাফির বাবা এবিএম হাবিবুর রহমান। তবে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ার আগেই ওই ঘরে থাকা পরিবারের ছয় সদস্য দরজা ভেঙে অক্ষত অবস্থায় বের হন। এদিকে আগুনে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট চরমে, ভোগান্তিতে যাত্রীরা