নিজস্ব প্রতিবেদক
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যশোরের বেজপাড়া বয়েজ ক্লাব পূজা কমিটি। যেখানে সন্তানেরা তাদের মায়ের পা ধুয়ে-মিষ্টি মুখ করিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। শুক্রবার শহরের বেজপাড়া পূজা মন্দিরে অষ্টমীর দিন ভিন্ন আঙ্গিকে শারদীয় দূর্গাপুজা উদযাপন করে।
মায়ের পায়ে ধুয়ে সম্মান জানাতে পেরে যেমনিভাবে সন্তানেরা খুশি হয়েছেন। অপর দিকে সন্তানের এমন ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়েছেন মায়েরা। আর মায়ের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা বোধ বাড়াতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেজপাড়া বয়েজ ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
এ উপলক্ষে একই স্থানে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বেজপাড়া বয়েজ ক্লাব পূজা কমিটির সভাপতি সুশীল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন নড়াইলের মনোরঞ্জন কাপুড়িয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. তাপসী কাপুড়িয়া, পূজা উদ্যাপন পরিষদের যশোরের সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ যশোরের সভাপতি সন্তোষ দত্ত, সহ-সভাপতি অসীম মন্ডল প্রমুখ।
আলোচনার পরই মন্দির প্রাঙ্গনে চেয়ারে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন মায়েরা। প্রথমে ধান ও দূর্বা দিয়ে আর্শিবাদ প্রার্থনা করেন সন্তানেরা। এসময় পানি নিয়ে একসঙ্গে পঞ্চাশের অধিক মায়ের পা ধুয়ে দিয়েছে সন্তানরা। পরে মায়েদের মিষ্টিমুখ করান। এ সময় আবেগে আল্পুত মায়েরা সন্তানকে জড়িয়ে ধরে আর্শিবাদ করেন। সন্তানেরা মেতে ওঠে আনন্দে।
অনুষ্ঠানে মায়ের পা ধুয়ে দেয়া যশোর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী অধরা বিশ^াস বলেন, প্রত্যেক সন্তানই তার মা-বাবাকে ভালবাসে। তবে সেটা বেশির ভাগ সময় প্রকাশ করতে পারে না। আজকের আমরা এমন একটা সুযোগ পেয়েছি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মায়ের প্রতিভালবাসা শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেল। এমন একটা সুযোগ করে দেয়ার জন্য তিনি বেজপাড়া ক্লাবকে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
অধরা বিশ্বাসের মা ঝুমুর গুপ্তা বলেন, সন্তানের প্রতি মায়ের আর্শিবাদ সব সময় থাকে। আজ দেবী দুর্গার সামনে সন্তানের আর্শিবাদ করতে পারছি।
খড়ের প্রতিমা পূজিস্ রে তোরা, মাকে ত’ তোরা পূজিস্নে! প্রতি মা’র মাঝে প্রতিমা বিরাজে হায় রে অন্ধ, বুঝিস্নে’- পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জাতীয় কবি কাজী নজরুর ইসলামের এই গানের উদাহরণ টেনে বলেন, আমাদের বাড়িতেই মা রয়েছে। সেই মাকে আমরা যত্ন করি না। অথচ প্রতিমা দূর্গাকে যতœ করি। এতে মা দূর্গা খুশি হন না। যদি নিজেদের মাকে শ্রদ্ধা করি; তাহলেই মা দূর্গা খুশি হন। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা দূর্গার সামনেই প্রকৃতি ব্যঞ্জনায় মাকে অনন্য শ্রদ্ধা জানালো। এটা আসলেই ব্যতিক্রম অনুষ্ঠান।’