নিজস্ব প্রতিবেদক
শহরতলীর হামিদপুরে আলোচিত সেই জমি নিয়ে রোববার দুপুর ১২ টায় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল ইসলামকে জমির মালিক উল্লেখ করে তা দখলমুক্তের দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা জাসদ সভাপতি রবিউল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজহারুল ইসলাম মন্টু, আবুল হোসেন, নজরুল ইসলাম চাকলাদার মন্টু, আব্দুস সাত্তার, শেখ আব্দুল রাজ্জাক, অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ, আমিরুল ইসলাম রন্টু, আফজাল হোসেন দদুলসহ অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মাস্টার নুরুল ইসলাম ১৯৮০ সালে ১৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা শিল্প ব্যাংক থেকে লোন নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দুই একর ৯৭ শতক জমি ওই ব্যাংকের অনুকুলে বন্ধক রাখেন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ডাকাতি হওয়ার কারণে তিনি লোন পরিশোধে ব্যর্থ হন। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মামলা করেন। এর মাঝে ওই এলাকার আসাদুজ্জামান ১৯৯২ সালের ১০ মে নিলামে দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকায় দুই একর ৯৭ শতক জমি কেনেন। কিন্তু অতিরিক্ত ৩৫ বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখেন। পরবর্তিতে এ ঘটনায় মামলা হয়। যা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আদালত থেকে সরেজমিনে তদন্ত করে সিদ্ধান্ত হয়, আসাদুজ্জামান যে অবৈধ ৩৫ শতক জমি দখলে রেখেছে তার কোনো সুযোগ নেই। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২১ জুলাই মাস্টার নুরুল ইসলাম ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করে দিলে দায়মুক্ত হন। একই সাথে এ মামলাটিরও নিস্পত্তি হয়। পরবর্তীতে আসাদুজ্জামান যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে আসাদুজ্জামান আপিল করেন। কিন্তু আপিল না মঞ্জুর হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আদালতে আপীল করলে এ আদালত সার্টিফিকেট আদালতের রায় বহাল রেখে আসাদুজ্জামানের আপিলটি না মঞ্জুর করেন। ফলে ওই জমির মালিক নুরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, নুরুল ইসলাম একজন অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি হাসপাতালে ভর্তি থেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। এমন সময় তার সম্পত্তি অন্যরা দখলে নিয়ে নেবেন তা মুক্তিযোদ্ধারা কিছুতেই মেনে নিবেন না। মাস্টার নুরুল ইসলামের ৩৫ শতক জমির দখল ফিরিয়ে দিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি হামিদপুরের জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি নুরুল ইসলামের লোকজন ওই বাড়ি ভাঙচুর করে দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনও হয়। সর্বশেষ শহিদুল ইসলাম মিলন তার ও তার ছেলের এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয় প্রমাণ দেখাতে পারলে ৩৫ লাখ ও আসাদুজ্জামান ওই জমির বৈধ কাগজ দেখাতে পারলে আরও ১০ লাখসহ মোট ৪৫ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
