নিজস্ব প্রতিবেদক
৯ রানে নেই দুই উইকেট। ক্রিজের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে ১৪ রানে চার উইকেটের দলে পরিণত হতে দেখেন শফিকুজ্জামান। ২১৭ রানের বোঝা মাথা নিয়ে ব্যাট করতে নামা মুসলিম ফ্রেন্ডস আদর্শ সংঘ তখন সম্মানজনক পরাজয়ের পথ খুঁজছিলেন। কেননা হারলেও রান রেটে এগিয়ে থেকে যশোর প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন নিশ্চিত হবে। প্রথমে ইব্রাহিমকে নিয়ে ১১২ রানের জুটি গড়ে প্রিমিয়ার ডিভিশন নিশ্চিত করেন। তারপরে দলকে নিয়ে যান জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যান শফিকুজ্জামান। যখনই ড্রেসিং রুমে দলের খেলোয়াড়রা জয় উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখনই শফিকুজ্জামান করে বসেন দুটি ছেলে মানুষী ভুল। দলের জয় থেকে চার রানে দূরে থাকতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে শফিকুজ্জামান দেন ভোঁ দৌড়। ক্রিজের মাঝামাঝি যাওয়ার পর দেখেন ফিল্ডারের হাতে বল। চেষ্টা করেছিলেন ফিরতে। তবে তার আগে উইকেট ভেঙ্গে দেন শতদলের সঞ্জয়। পরে ক্রিজে অপরাজিত থাকা ইমরান আর চার রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি। পরতে পরতে রং বদলানো ম্যাচে তিন রানের জয় পায় শতদল। এই জয়ে লিগের সেরা দুই দলের একটি সম্ভবনা বাঁচিয়ে রাখল শতদল। অপরদিকে রানরেটে এগিয়ে থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন নিশ্চিত করেছে বসুন্দিয়ার দলটি।
এই দুই দলের সাথে প্রিমিয়ার লিগে যাওয়ার সম্ভবনায় রয়েছে উপশহর ইয়থ। তিন দলের মধ্যে ইতোমধ্যে উপশহর ইয়থ বাদে বাকি দু’টি দল তাদের মিশন শেষ করেছে। একটি ম্যাচে পরাজিত আর দু’টি ম্যাচে জয় পেয়ে সমান চার পয়েন্ট অর্জন করেছে মুসলিম ফ্রেন্ডস ও শতদল।
উপশহর ইয়থ দু’টি ম্যাচ খেলে একটিতে জয় অপরটিতে পরাজিত হয়েছে। তাদের সংগ্রহ দুই পয়েন্ট। বাকি ম্যাচটিতে তারা জয় পেলে তিন দলেরই পয়েন্ট হবে চার করে। তখন নিট রান রেটে শীর্ষ দু’টি দল চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ হবার গৌরব অর্জন করবে। তারাই পেয়ে যাবে পরবর্তী মৌসুমে প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ খেলার ছাড়পত্র।
সুপার ফোর পর্বে শনিবার শেষ হওয়া ম্যাচের ভিত্তিতে দেখা যায় নিট রান রেটে এগিয়ে আছে মুসলিম ফ্রেন্ডস। তাদের নিট রান রেট প্লাস ১.৫৯। তার পরেই রয়েছে শতদল। তাদের নিট রান রেট প্লাস ১.০৫। উপশহর ইয়থের নিট রানরেট একটি ম্যাচ বাকি থাকা অবস্থায় প্লাস ০.৪১। রেসের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে শেষ ম্যাচে উপশহর ইয়থকে বেশ বড় ব্যবধানেই জয় তুলে নিতে হবে।
এদিনের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ২১৬ রান করে শতদল। পরে ব্যাট করতে নেমে ৩৯ ওভার শেষে ২১৩ রানে গুটিয়ে যায় মুসলিম ফ্রেন্ডর্সের দলগত ইনিংস।
শতদলের ব্যাটিং ইনিংসে মৌমন ৬১ বলে একটি চার ও চারটি ছয়ে ২৯, ফয়সাল ৯২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয়ে ৮৬, সজিব ২০ বলে একটি ছয়ে ১০, শিমুল ৩৭ বলে একটি চার ও পাঁচটি ছয়ে ৫২ ও তুষার নয় বলে তিনটি ছয়ে ২২ রান করেন।
বল হাতে মুসলিম ফ্রেন্ডর্সের ইব্রাহিম ৩৭ রানে তিনটি, শফিকুজ্জামান ৩৮ রানে দু’টি এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন ইমরান ও আল মামুন।
মুসলিম ফ্রেন্ডসের ব্যাটিং ইনিংসে শফিকুজ্জামান ৯২ বলে ১০৪, সাদিকুল ইসলাম ১৪ বলে একটি চারে ১১, ইব্রাহিম ৭১ বলে একটি চার ও পাঁচটি ছয়ে ৪৯ ও ইমরান ১৬ বলে একটি চার ও ছয়ে ১৫ রান করেন।
বল হাতে শতদলের শিমুল ৩৪ রানে তিনটি, শামীম ৪০ ও তুষার ২২ রানে নিয়েছেন দু’টি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন সঞ্জয়।