নিজস্ব প্রতিবেদক
টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন যশোরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া ছায়া (১৮)।
বুধবার (৬ আগস্ট) গভীর রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের বেডে ছায়া বলছিলেন, আমি পরীক্ষা দিতে চাই। কিন্তু জীবনের পরীক্ষার কাছেই তিনি হেরে গেলেন।
ছায়ার বোন মিতু জানান, গত ২৫ জুলাই দুপুরে রিকশাযোগে তিনি যশোর শহরের দড়াটানা থেকে খড়কি এলাকায় বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে পায়ের নিচ থেকে পলিথিন তুলতে গিয়ে নিচু হন ছায়া। সে সময় ওড়নাটি রিকশার চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যায়। এতে তার গলায় ফাঁস লাগে এবং ছিটকে পড়ে যান রিকশা থেকে। ঘটনাস্থলেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন ছায়া। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর আট দিন লাইফ সাপোর্টে থাকেন। পরে বুধবার না ফেরার দেশে চলে যান ছায়া।
ছায়ার চিকিৎসক মিটফোর্ড হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ব্রেইন ও স্পাইন বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. ফিরোজ আহমেদ আল-আমিন বলেন, দুর্ঘটনায় তার মেরুদণ্ড ছিঁড়ে যায় এবং স্পাইনাল কর্ড সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মেরুদণ্ডের হাড়গুলো সংযুক্ত করা হয়। তবে স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে যাওয়ায় তা আর জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। অপারেশনের পর প্রথমে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৯ জুলাই রাত ১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। বুধবার গভীর রাতে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এদিকে, ছায়ার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে যশোর সদর উপজেলার দৌগাছিয়া গ্রামে। স্বজনেরা স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন ছায়ার শোকে। স্কুল–কলেজের বন্ধু, শিক্ষক, প্রতিবেশী কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না, ছায়া আর নেই।
আরও পড়ুন: থানায় ঢুকে পুলিশকে হুমকি দেয়া জামায়াত নেতা সকালে গ্রেপ্তার, দুপুরে জামিন