নিজস্ব প্রতিবেদক
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ভারতে পাচার করেছিলেন মজনু বিশ্বাস (৪৪) ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন (২৫)। সেই ঘটনায় আদালতে পিটিশন মামলা হয়। এরপর গ্রেপ্তার এড়াতে তারা আত্মগোপন করেন। এমনকি মজনু মারা গেছেন বলে প্রচার করেন। শুধু তাই নয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মজনুর মৃত্যু সনদও নেয়া হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর ‘মৃত’ মজনুকে জীবিত অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে। সাথে তার স্ত্রীকেও।
৯ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পুলিশ তাদেরকে ঝিনাইদহ সদরের জোড়াপুকুর পাগলাখানা রোডস্থ খলিলের বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। আটকরা ঝিনাইদহ সদরের সুরাট পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আটকদেরকে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পিবিআই’র এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুমান ৩ বছর পূর্বে যশোর সদর উপজেলার শেখহাটি জামরুলতলা এলাকায় বিয়ে হয় ওই নারীর। বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রী শেখহাটি জামরুলতলার জনৈক আসাদের টিনসেট বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। একই বাড়িতে মজনু বিশ^াস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো। একই বাড়িতে বসবাসের সুযোগে মজনু বিশ^াস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুনের সাথে ওই নারীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে সখ্যতা হলে প্রতারণা করে তাকে ভারতে পাচার করে পতিতাবৃত্তি করানোর জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে আটক দম্পতি। সে লক্ষ্যে গত বছরের ২২ মে তাকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করে গুজরাটে নিয়ে যায় এবং পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে বিক্রি করে দেয়। ওই নারী বুঝতে পেরে তাদের কাছ থেকে চলে আসার চেষ্টা করে। কিন্ত আসামিরা খুন করার হুমকি দিয়ে আটকে রাখে। প্রায় ৭ মাস পরে বন্দিদশা থেকে পালিয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে এসে আদালতে পিটিশন মামলা করেন ওই নারী। মামলাটি পিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করে আসামি মজনু বিশ^াস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুনকে রোববার (৯ এপ্রিল) ঝিনাইদহের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। এরপর সোমবার যশোর কোতোয়ালি থানায় ভিকটিমে পিতা শহরের পুরাতন কসবা বিবি রোড কদমতলার এক ব্যক্তি মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় আটক স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ধারী আরো ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিরা হলো ঝিনাইদহ জেলা সদরের সুরাট পূর্বপাড়া গ্রামের মজনু বিশ্বাস ও তার স্ত্রী মাজেদা খাতুন (২৫), নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার কুমড়ি পূর্বপাড়া গ্রামের সোহাগ সরদার ও তার স্ত্রী মিম বেগম ওরফে জয়া ওরফে রিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন।
অন্যদিকে সোমবার ১০ এপ্রিল গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে সোপর্দ করলে তারা পাচারের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান-২ জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, মামলা তদন্তকালে মজনু বিশ্বাস মৃত বলে জানা যায়। এমনকি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মজনু বিশ্বাসকে মৃত বলে প্রত্যয়ন প্রদান করেন।
১ Comment
Pingback: যশোরে কিশোর গ্যাং নিয়ে উদ্বেগ