শিব্বির আহ্মেদ, মোড়েলগঞ্জ: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে সরকার ঘোষিত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল সংগ্রহের প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের এক মাস দশ দিন অতিবাহিত হলেও এক ছটাক ধানও কিনতে পারেনি খাদ্যগুদাম। কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে গুদামে ধান দিতে গেলে নানাবিধ হয়রানির শিকার হতে হয়। সরকারি মূল্যের সাথে বাজারদরের সামঞ্জস্য না থাকায় এ সংগ্রহ অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস সূত্র ও সরেজমিনে জানা গেছে, সরকার কর্তৃক ঘোষিত সারাদেশের ন্যায় এ উপজেলায় চলতি বছরে সরকার নির্ধারিত ২৮ টাকা কেজি দরে ১৩শ ৭৪ মেট্রিক টন আমন ধান কৃষকদের কাছ থেকে আমন সংগ্রহ ১৭ নভেম্বর থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কথা থাকলেও এ কার্যক্রমের একমাস দশ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কোন ধান সংগ্রহ করতে পারেনি।
১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ কৃষকরা সরকার নির্ধারিত এ মূল্যে ধান দিতে আগ্রহ হারাচ্ছে দিন দিন। একাধিক কৃষকরা বলছেন সরকারি মূল্য ১১শ’ ২০টাকা করে প্রতিমণ ধান কিনছে খাদ্য গুদাম। সেখানে রয়েছে ধানের আদ্রতা পরিমাপে জটিলতা, অনেক দূর থেকে বয়ে নিয়ে গিয়েও পুনরায় ধান নিয়ে ফিরে আসতে হয়।
বিভিন্ন প্রকারের হয়রানির স্বীকার হতে হয় তাদের। অথচ বাড়ি থেকে বেপারিরা মাঠের সদ্য কাটা ধান কিনছে হাজার টাকা দরে প্রতি মণ। এদিকে ধান চাল সংগ্রহ উপজেলা নামমাত্র কমিটি থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে সংগ্রহে নেই কোন প্রচার-প্রচারণা। অনেকেই জানেনা ধান দেয়ার নির্ধারিত সময়। বিগত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ধান ক্রয়ে টার্গেট ছিলো ৬শ’ ৭ মেট্রিক টন, সেখানে ধান ক্রয় হয়েছে মাত্র ৬১ টন। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে টার্গেট ৯শ’ ১৬ মেট্রিকটন। সেখানে খাদ্যগুদাম কিনছে মাত্র ২৭ টন।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও খাদ্যশষ্য সংগ্রহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহের প্রতিবন্ধকতায় বাজার ও সংগ্রহ মূল্যে কাছাকাছি থাকায় এর প্রভাব পড়েছে সংগ্রহের ক্ষেত্রে। খাদ্যগুদামের ক্রয়ের ক্ষেত্রে মহেশচার, চিটামুক্ত, পরিস্কার এ ধরনের বিধি নিষেধ থাকায় যে কারণে অনেক কৃষকই ধান দিতে পারছে না। হয়রানির বিষয়টি সঠিক নয়।
এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংগ্রহ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ধান ক্রয়ে বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্য না থাকা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় ধান ক্রয়ে সমস্যা হচ্ছে। তবে, সংগ্রহের ক্ষেত্রে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।