তালা প্রতিনিধি: তালায় পরকীয়ার জেরে শাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা মামলা পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ চার দিনেও রেকর্ড করেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উল্টো হত্যাচেষ্টাকারী গৃহবধূর পক্ষ নিয়ে মীমাংসা করার জন্য পুলিশ মামলার বাদীকে হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাদী।
উপজেলার কাশিপুর গ্রামের খোর্দ্দ পাড়ার চন্দ্র শেখর দাশের ছেলে যুগোল দাশ জানান, ৭ বছর আগে তিনি তালার বারাত গ্রামের শ্যামল দাশের মেয়ে প্রিয়ন্তী দাশকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তাদের ঘরে জয়া দাশ (৫) নামের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। যুগোল দাশ পেশায় গরুর ব্যবসায়ী হওয়ায় প্রায় সময় তাকে বিভিন্ন এলাকায় থাকতে হয়। তিনি বাড়িতে না থাকলে সেদিন রাতে তার স্ত্রী প্রিয়ন্তী দাশের সাথে তার মা সাধনা দাশ থাকেন। গত শনিবার যুগোল দিনাজপুরে থাকায় রাতে প্রিয়ন্তীর সাথে তার মা সাধনা ঘুমিয়েছিল। রাত দেড়টার দিকে স্ত্রী প্রিয়ন্তী দাশ একই গ্রামের সুভাষ দাশের ছেলে দিপু দাশ’র সহযোগিতায় পরিকল্পিত ভাবে হাত, পা বেঁধে তার মাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় এক প্রতিবেশি বিষয়টি বুঝতে পেরে সাধনাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে তাকে স্থানীয় চিকিৎসা শেষে রোববার সকালে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অপরদিকে ঘটনার সময় হত্যার চেষ্টাকারী দিপু পালিয়ে গেলেও পরিবারের ও গ্রামের লোকজন পুত্রবধূ প্রিয়ন্তীকে আটক করে। সকালে গ্রামের সালিসি সভায় দিপু হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা ও ঘটনার বিবরণ প্রকাশ্যে ফাঁস করে দেয়। এছাড়া তারা দুজনে কিভাবে ও কখন সাধনা দাশকে খুন করবে- তা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একে অপরের সাথে আলোচনা করে। যার স্কিন শর্ট দিয়ে গ্রামবাসীর কাছে দিয়ে দেয় দিপু। শাশুড়িকে কিভাবে খুন করা হবে এবং খুনের সময় কার কি ভূমিকা থাকবে তা ম্যাসেঞ্জারে আলোচনার মাধ্যমে পরিকল্পনা করে পুত্রবধূ প্রিয়ন্তী ও যুবক দিপু দাশ। এ ঘটনার সাথে নাম প্রকাশ না করা অপর এক যুবক জড়িত থাকলেও ভয়ে সে হত্যা মিশনে অংশ নেয়নি বলে ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিং থেকে জানা যায়। এ বিষয়টি ফাঁস হবার পর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে মাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টার ঘটনার পর থেকে ঘটনার হোতা প্রিয়ন্তী দাশ তার পিতার বাড়িতে অবস্থান করছে। এ ঘটনায় পাটকেলঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তা ৪ দিনেও রেকর্ড করেনি। উল্টো তদন্তকারী অফিসার এসআই কৃষ্ণ চন্দ্র মামলা না করে বিষয়টি মীমাংসা করে নেয়ার জন্য বাদীকে চাপ প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ বাদীল। এছাড়া কথা না শুনলে ফল ভালো হবে না মর্মে হুমকি দেয়া হয়েছে বলে যুগোলের পিতা চন্দ্র শেখর দাশ অভিযোগ করেছেন।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নাই। আর আমার কাছে এখনও কেউ আসেনি বা কোনো অভিযোগ পায়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রিয়ন্তী দাশের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার পিতা শ্যামল দাশ জানান, ঘটনা যায় ঘটুক এ বিয়ষে পাটকেলঘাটা থানায় একটি সালিস হয়েছে। সালিসে সব মিটে গেছে।