নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শোকের মাস আগস্টে ওরিয়েন্টেশন নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শোকের মাসে ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করায় আয়োজক কমিটির এক সদস্য পদত্যাগও করেছেন। ২৩ আগস্ট বুধবার এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে এই ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠিত হবে।
যবিপ্রবি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ২৩ আগস্ট এবং ২৬ আগস্ট ক্লাস শুরুর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু শোকের মাস আগস্টে ওরিয়েন্টেশনের দিন নির্ধারণ করায় এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ জানান, ওরিয়েন্টেশন মূলত নবীনবরণের মতই হয়ে থাকে। নতুন শিক্ষার্থীদের মাঝে এদিন উৎসবের আবহ থাকে। ফলে শোকের মাসে এই অনুষ্ঠান করা যায় না। আর নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য যেহেতু এটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকে; তাই উৎসবের আবহ না থাকলে তাদেরও মন খারাপ হয়। এজন্য অনুষ্ঠানটি এক সপ্তাহ পিছিয়ে সেপ্টেম্বরে করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেননি।
এদিকে, শোকের মাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় আয়োজক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন যবিপ্রবি শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার। তিনি মঙ্গলবার এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করে আহ্বায়ক বরাবর পত্র দিয়েছেন।
অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার জানিয়েছেন, ওরিয়েন্টেশন আসলে নবীনবরণ অনুষ্ঠান। তাই শোকের মাসে এই অনুষ্ঠান না করে এক সপ্তাহ পর সেপ্টেম্বরে আয়োজন করলেও কোনো ক্ষতি ছিল না। কিন্তু আগস্টে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ব্যক্তিগতভাবে অংশগ্রহণে অপারগতা জানিয়ে আয়োজক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি অধ্যাপক ড. শিরিন নিগারের পদত্যাগপত্র পেয়েছেন। যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে; তিনি শুধুমাত্র অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক।
আগস্ট মাসে ওরিয়েন্টেশন আয়োজন প্রসঙ্গে যবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, শোকের মাসে ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে এই অনুষ্ঠান হবে। ওরিয়েন্টেশকে ক্লাস হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। এদিন নবীণ শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, কন্ট্রোলার, ডিনগণ, চেয়ারম্যানগণসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ঘুরে দেখে। এদিন কোনো নাচ, গান বা উৎসব হবে না। তিনি দাবি করেন, শোকের মাসের কথা বলে যারা এই অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করছে; তারা ভণ্ডামি করছে।