নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আহনাফ তাহমিদ বাধনকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ওবায়দুল হোসেন আকাশ নামে এক পরিবহন শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ। গত ২৩ আগস্ট রাতে এই ঘটনা বাধন কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন। এদিকে হামলার ঘটনার জের ধরে পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর বিচার দাবিতে সভা করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। বিচার দাবিতে আজ রোববার তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেবে।
ভুক্তভোগী আহনাফ তাহমিদ বাধন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের মাধঘোপ গ্রামের মনির চৌধুরীর ছেলে। আটক আকাশ অভয়নগর উপজেলার আফরা গ্রামের মিনারুল ইসলামের ছেলে। পলাতক মিরাজুল ইসলাম যশোর শহরের পণিহার এলাকার বাবুর ছেলে।
বাধন মামলায় জানিয়েছেন, তার মা রাশিদা চৌধুরী গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে যশোরগামী বাসে করে বন্ধু তপুকে সাথে নিয়ে শহরের মণিহার বাস স্ট্যান্ডে আসেন। গাড়ি থেকে নামার সময় সুপারভাইজার আকাশ ও মিরাজের সাথে তর্কবিতর্ক হয়। এসময় শিক্ষার্তী বাধন তাদের কাছে তর্কবিতর্কের বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু তারা বাধনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। গালি দিতে নিষেধ করায় মিরাজুলের হাতে থাকা চাকু দিয়ে শিক্ষার্থী বাধনকে জখম করে। একই সাথে আকাশও তাকে কিলঘুষি মারতে থাকে। এসময় ঠেকাতে গেলে বাধনের মা রাশিদা চৌধুরীর কাপড় টেনে শ্লীলতাহানি ঘটায় বলে দাবি করা হয়। একই সাথে তার বন্ধু তপুকেও মারপিট করে। এসময় বাধনের চিৎকারে আশপাশে থাকা মারুফ হোসেন ও সামিউল আজিম নিশান এগিয়ে আসলে জড়িতরা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে এ ব্যাপারে দুইজনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরো ১২/১৫ জনের বিরুদ্ধে রাতেই কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিদ বাধন। রাতেই পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিক আকাশকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। আকাশকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই মিজানুর রহমান।
অপরদিকে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে একটি পক্ষ ২৩ আগস্ট রাতে পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন যশোর শাখা অফিসে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করে নেয়। একই সাথে ২৪টি বাস ভাংচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে যশোর জেলা বাস মালিক সমিতি, মিনি বাস মালিক সমিতি, মটর শ্রমিক ইউনিয়ন, ইন্টার ডিস্টিক্ট বাস সিন্ডিকেট, খাজুরা বাস মালিক সমিতিসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শনিবার অফিসে মিটিং করেন। সেই মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ রোববার যশোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবেন। সমস্যার সমাধান না হলে গাড়ি চলাচল বন্ধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোর্ত্তজা হোসেন।