রুকুনউদ্দৌলাহ: যশোরের সাংবাদিকরা বর্তমানে এক নতুন বিড়ম্বনার মুখে পড়েছেন। আর তা হলো খবর তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য না পাওয়া। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুযায়ী ইতিবাচক-নেতিবাচক কোন খবরই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ছাড়া প্রকাশযোগ্য নয়। কিন্তু যশোরে প্রতিনিয়ত যেসব ঘটনা ঘটছে, তার খবর লিখতে গিয়ে সাংবাদিকরা এই বক্তব্য নিতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
বিড়ম্বনা কার্পণ্য বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে পুলিশের ক্ষেত্রে। জেলা উপজেলা পর্যায়ের অধস্তন উর্দ্ধতন সব স্তরেই এ কার্পণ্য করা হচ্ছে। বক্তব্যের জন্য ফোন করা হলে কোন কর্মকর্তাই ফোন ধরেন না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ফোন না ধরার ক্ষেত্রে যেন সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু আসলে তা নয়। অনেকেই ফোনে দায়িত্বীলদের না পেয়ে ক্ষুদ্র বার্তা পাঠান ‘আমি —বিষয়ে আপনার সাথে কথা বলতে চাই। কিন্তু আপনাকে পাচ্ছিনে’।
স্বাভাবিক সৌজন্যতা হলো ফোনে রিং হবার সময় যদি কেউ অন্য জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে পরে রিং ব্যাক করা। পেশাগত অর্ধ শতাব্দিকালে তাই দেখেছি। কিন্তু বর্তমানে পুলিশ সেই সৌজন্য বোধটুকু হারিয়ে ফেলেছে। তারা ফোন তো ধরছেই না, আর ব্যাক করার তো প্রশ্নই আছে না। সারা দিন দৌড়াদৌড়ি করে খবরটি তৈরি করে পুলিশের ফোন না ধরা মানসিকতার ওই সব কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কারণে সেটি আর আলোর মুখ দেখতে পারে না। আর এই হীনমন্যতার কারণে প্রতিনিয়ত কত যে জনগুরুত্বপূর্ণ খবর আলোর মুখ দেখছে না তার ইয়ত্বা নেই।
মজার ব্যাপার হলো, বক্তব্য ছাড়াই খবরটি প্রকাশ হলে বক্তব্য দিতে তখন ওই পুলিশ কর্মকর্তার আর ব্যস্ততা থাকে না। ফোন করে প্রকাশিত খবরের ভুল-ত্রুটি ধরেন, অনেক আপত্তিকর মন্তব্য করতেও দ্বিধা করেন না।
পুলিশ ও সাংবাদিক কিন্তু একে অপরের পরিপূরক। পুলিশ সমাজকে সংশোধন করে। আর সাংবাদিক সমাজের বাস্তব চিত্রটি প্রতিনিয়ত তুলে ধরেন। পুলিশ যদি তাদের দায়িত্ব পালন না করে তাহলে সাংবাদিক শত কিলোমিটার খবর লিখলেও তা অসার বস্তুতে পরিণত হবে। সৃষ্টি হবে যোজন যোজন দূরত্বের শূন্যতা।

