নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে যশোরের পরিস্থিতি। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ঘোষণা করা হয়। এদিন সকাল থেকেই শহরে বিপুল সংখ্যক রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইকসহ গণপরিবহন চলাচল করতে দেখা গেছে। খোলা ছিলো জরুরি সেবাসহ সকল ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
গেলো কয়েকদিনের আন্দোলন ও কারফিউ জারির মধ্যে সারা দেশের সাথে কার্যত অচল হয়ে পড়েছিলো যশোর। তবে ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকে শহরের বড় বাজার, দড়াটানা, চিত্রামোড়, মনিহারে সকল ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিলো। ক্রেতাসমগমও ছিলো চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, থমথমে অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন সাধারণ মানুষ। ফলে নির্বিঘেœ ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। ইন্টারসেবাও কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। কারফিউ শিথিল থাকায় বাজারে ক্রেতা সমাগমও তুলনামূলক বেশি ছিলো।
শহরের বড় বাজারের মুদি ব্যবসায়ী চঞ্চল বিশ্বাস জানান, গেলো কয়েকদিনে অরাজকতা পরিবেশে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হয়নি। ফলে থমকে গিয়েছিলো ব্যবসা। তবে দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারছেন। যার কারণে দোকানে ক্রেতা বেড়েছে।
অপর একজন ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, যশোরে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোন রকম সহিংসতা না হলেও কারফিউর কারণে থমকে গিয়েছিলো জনজীবন। এখন আমরা স্বাভাবিক অবস্থা অনুভব করছি। পাশাপাশি যশোরে কারফিউ শিথিল থাকার কারণে কোন বাধা ছাড়াই ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যশোরের প্রশাসনের একান্ত প্রচেষ্টায় আমরা ভালো আছি। এখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেনি। আমরা আশা করবো আগামী দিনেও শক্তভাবে যশোরের পুলিশ-প্রশাসন সহিংসতাকারীদের প্রতিরোধ করবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এক সপ্তাহ আগে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াও, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, সরকারি স্থাপনায় আগুন দেওয়াসহ সারাদেশে সহিংসতা ও নাশকতা চালায় দুর্বৃত্তরা।
এই নাশকতা ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী মাঠে নামায় সরকার। এরপরেই সারাদেশে বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে জেলা ভিত্তিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দেয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে যশোরে প্রথমে দুই ঘণ্টা, পরে ৪ ঘণ্টা এবং সর্বশেষ ১৪ ঘণ্টার কারফিউ শিথিলের ঘোষণা দেয় জেলা প্রশাসক।