নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে নিয়ম লঙ্ঘন করে পাঁচ নদীতে নির্মাণাধীন আটটি সেতু নির্মাণের কাজ আগামি তিন মাসের জন্য স্থাগিত করেছেন উচ্চ আদালত। গত সোমবার নদ সংস্কার আন্দোলনকারীদের রিটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কে এস শামরুল কাদের এবং বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এলজিইডির প্রকৌশল বিভাগ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে এই রুল জারি করেন।
এর আগে ‘বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হচ্ছে সেতু’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কল্যাণ। এর পর নিয়ম লঙ্ঘন করে পাঁচ নদীতে আটটি সেতু নির্মাণের অভিযোগ এনে পাঁচ দপ্তরকে আইনি নোটিশ পাঠান ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলন কমিটি। চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদের পক্ষে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সামছুল হক। সেতুগুলো হলো ভৈরব নদের ওপর ছাতিয়ানতলা, দাইতলা ও রাজারহাট সেতু, মণিরামপুরে মুক্তেশ্বরী ও শ্রী নদীতে দুটি, অভয়নগরের টেকা নদীতে একটি এবং শার্শার বেতনা নদীতে দুটি সেতু।
আদেশে বলে হয়েছে, ‘বিআইডব্লিউটিএ ছাড়পত্র না নিয়ে এবং নীতিমালা লঙ্ঘন করে যশোরের ভৈরব নদসহ পাঁচটি নদ নদীতে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে আট সেতু। কম উচ্চতায় এসব সেতু নির্মাণ করায় চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ও ৫ এপ্রিল বিআইডব্লিউটিএ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছিল। বিআইডব্লিউটিএ পক্ষ থেকে উচ্চতা নিয়ে আপত্তি জানানোর পরও তা আমলে নেয়নি সরকারের এ প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব সেতু বন্ধ করার জন্য ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনেও স্মারকলিপি দিয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো মোটেও পাত্তা দেয়নি। জারিকৃত রুলে আগামী তিন মাসের জন্য সেতু সমূহের নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখার আদেশ দেওয়া হলো। সরকারপক্ষের মামলা পরিচালনা করছেন এ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।
ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, নদী প্রবহমান করতে নদী সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু অপরিকল্পিত এসব সেতু নদী প্রবহমান করার ক্ষেত্রে অন্যতম বাঁধা। আমরা বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি। ফলে প্রথমে আমরা আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এখন উচ্চ আদালতের বিচারক এসব সেতু গুলো নির্মাণ কাজ স্থগিত করেছেন। এলজিইডি যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কোন নোটিশ পায়নি। এছাড়া সব কয়টি সেতুই বর্তমান কাজ চলমান রয়েছে। তবে তিনি দাবি করেন, সেতুগুলো উচ্চতা মেনেই নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে বিআইডব্লিউটিএ-এর ছাড়পত্র নিয়ে কাজ করা হয়নি-এটা ঠিক।