নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে অপহরণ এবং ঢাকায় আটকে রাখার অভিযোগে বৃহস্পতিবার আদালতে কানাডা প্রবাসী মাসুম হোসেন সিদ্দিক (৬৭) মামলা করেছেন। অপহরণের শিকার মাসুম হোসেন সিদ্দিক তার সাবেক স্ত্রী শরিফা আক্তার পিয়াসহ ৪ জনকে আসামি করে যশোরের আদালতে এই মামলাটি করেছেন।
মাসুম হোসেন সিদ্দিক শহরের পুরাতন কসবা শহীদ মশিউর রহমান সড়কের এরশাদ হোসেন সিদ্দিকের ছেলে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তার অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, যশোর শহরের বেজপাড়া চিরুন কল এলাকার মৃত সফি মিয়ার মেয়ে শরিফা আক্তার পিয়া, ছেলে মোমিনুর রহমান বিপুল, রেলগেট তেঁতুলতলা এলাকার গোলাম মহিউদ্দিনের ছেলে ইফতেখার আলম তুষার ও ঢাকার সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকার মৃত সামছুর রহমানের ছেলে মো. হেবজু রহমান।
মাসুম হোসেন সিদ্দিকের অভিযোগ, আসামিদের মধ্যে শরিফা আক্তার প্রিয়া তার সাবেক স্ত্রী। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শরিফা আক্তার প্রিয়ার সাথে আদালতে তার মামলা চলছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ১০টার দিকে তার ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া পলাশের চালের দোকানে বসেছিলেন। এ সময় একটি মাইক্রোবাসে (খুলনা মেট্রো-চ-২০-৪৬১৪) করে অজ্ঞাতনামা ৬/৭ ব্যক্তি সেখানে আসেন। তারা নিজেদের প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে মাসুম হোসেন সিদ্দিককে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেন। এরপর তারা শহরের ফাতিমা হাসপাতালের সামনে গিয়ে মাইক্রোবাসটি দাঁড় করান। সেখানে একটি মোটরসাইকেল নিয়ে আগে থেকে অবস্থান করছিলেন মাসুম হোসেন সিদ্দিকের সাবেক স্ত্রী শরিফা আক্তার প্রিয়া ও সাবেক শ্যালক মোমিনুর রহমান বিপুল। এ সময় অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিরা মাসুম হোসেন সিদ্দিকের কাছ থেকে ১টি আইফোন, নগদ ৬০ হাজার টাকা ও বাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে শরিফা আক্তার প্রিয়া ও মোমিনুর রহমান বিপুলের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা মাসুম হোসেন সিদ্দিককে বলেন, কেন তিনি জমি নিয়ে মামলা করেছেন। কানাডায় না গিয়ে কেন যশোরে পড়ে আছেন। কানাডায় ফিরে না গেলে তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দিবেন মর্মে হুমকি দেন। এরপর তারা তাকে ঢাকার সাভারের আশা মাদকাসক্তি তথ্য সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে আসামি হেবজু রহমান তাকে আটকে রাখেন। পরে মাসুম হোসেন সিদ্দিকের বোন রনজুলা বেগম ঘটনাটি জানতে পেরে যশোরে পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। পুলিশ আসামি শরিফা আক্তার প্রিয়াকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি মাসুম হোসেন সিদ্দিককে লোকজনের সহায়তায় অপহরণ এবং ঢাকায় আটকে রাখার কথা স্বীকার করেন। এরপর মাসুম হোসেন সিদ্দিকের ভাগ্নে শাহ ইমরান খান ঢাকার ওই মাদকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে তাকে উদ্ধার করেন। মাসুম হোসেন সিদ্দিকের অভিযোগ, তাকে অপহরণ কাজে অপর আসামি ইফতেখার আলম তুষার অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিদের সহায়তা করেছিলেন।