নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ইজিবাইক চালক রাশেদ উদ্দিন (২৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। খুনের সাথে জড়িত অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও ডিবি পুলিশ সদস্যরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আটককৃতরা হচ্ছে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পারবাজার গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে জান্নাত আক্তার ওরফে আয়শা (২২), বাঘারপাড়া উপজেলার বারভাগ গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিন মোল্লার ছেলে মেহেদি হাসান ওরফে মিলন (২৩) ও অভয়নগর উপজেলার কোটা গ্রামের কলিম বিশ্বাসের ছেলে রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু (২২)। এর আগে ২ মার্চ সকালে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে রাশেদ নিখোঁজ হয়। সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় তার মা রেহেনা খাতুন রাশেদের সাথে সর্বশেষ রাত ৮ টায় কথা বলে। এরপর মোবাইলে রাশেদকে আর পাওয়া যায়নি। রাশেদ ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। রাশেদ নিখোঁজের পর পিতা জসিম উদ্দিন ঝিকরগাছা থানায় জিডি করতে গেলে জানতে পারেন অভয়নগর থানা পুলিশ একটি মৃত্যুদেহ উদ্ধার করেছে। পরে তিনি ঘটনাস্থলে যেয়ে রাশেদকে সনাক্ত করেন। কিন্তু তার ইজিবাইকটি পাওয়া যায় না। এ ঘটনায় পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৪ মার্চ দুপুরে পিবিআই জান্নাত আক্তার আয়শাকে ঝিকরগাছার কৃষ্ণনগর গ্রামের জনৈক মিজান ড্রাইভারের ভাড়া বাড়ি থেকে, একই দিন বিকেলে যশোর সদরের মুড়লি মোড় বাসস্ট্যান্ড থেকে মেহেদি হাসান মিলনকে, ও রাত পৌনে ১২ টার সময় সদরের বসুন্দিয়া মোড় থেকে ডিবি পুলিশ রিমন বিশ্বাস বাবুকে আটক করে। এদের মধ্যে মেহেদি হাসান মিলনের কাছ থেকে রাশেদের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এস আই ডিএম নুর জামাল হোসেন জানান, আটক আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় মেহেদী হাসান মিলন, রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু ও জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশা সংঘবদ্ধ ইজিবাইক ছিনতাই ও অজ্ঞানপার্টির সদস্য। তারা যশোর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় ইজিবাইক ও ভ্যান ছিনতাই করে বিক্রয় করে থাকে। মেহেদী হাসান মিলনকে রিমন বিশ্বাস ওরফে বাবু ভিকটিম রাশেদের ইজিবাইক ভাড়া ঠিক করে দেয়। মেহেদী হাসান মিলনের সাথে পরিকল্পনা করে কিভাবে ইজিবাইকটি ছিনতাই করবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী মেহেদী তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার ওরফে আয়েশাকে নিয়ে রাশেদের ইজিবাইকটি ভাড়া করে। পরিকল্পনানুযায়ী তারা প্রথমে রাজগঞ্জ ঝাঁপা বাওড় এলাকায় বেড়াতে যায়। ঝাঁপা বাওড়ে থাকা ভাসমান ব্রিজে তারা কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে। একপর্যায়ে ইজিবাইক নিয়ে অভয়নগর থানার ধোপাদী গ্রামের উলুর বটতলা থেকে মশরহাটিগামী ইটের সলিং রাস্তার ডান পাশের্^ পৌছালে মেহেদী হাসান মিলন ইজিবাইক থামিয়ে নিজের পরণে থাকা রাবারের বেল্ট খুলে ভিকটিম রাশেদের গলায় ফাঁস দিয়ে জোরে টেনে ধরে। আয়েশা দুই পা চেপে ধরে। রাশেদ মারা গেলে মৃতদেহ ঘটনাস্থলের পাশে থাকা জনৈক আজিজুর রহমান সরদারের মৎস্য ঘেরের পানির মধ্যে ফেলে দেয়। তারপর তার ইজিবাইক রাজারহাট এলাকায় এনে মিলনের বন্ধুর নিকট বিক্রি করে দেয়। রোববার আটককৃতরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
১ Comment
Pingback: ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ছয় লেন মহাসড়ক নির্মাণে তোড়জোড় - দৈনিক কল্যাণ