নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের বিভিন্ন ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট, জরিমানা ও ভাঙচুর বন্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও স্মারকলিপি দিয়েছে জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি। অভিযানের নামে ইটভাটায় গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। হয়রানি বন্ধ ও চলতি মৌসুম কাজ চালাতে প্রধান উপদেষ্টা এবং পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি দেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে সহস্রাধিক ইটভাটা মালিক ও শ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ে যায়। এ সময় তারা সেখানে দাবি দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। হয়রানি বন্ধ না হলে ঈদের পরে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সারা দেশ অচল করে দেওয়ারও হুশিয়ারি দেন মালিক শ্রমিকরা।
অফজাল হোসেন নামে এক ভাটা শ্রমিক বলেন, সরকার এখন ভাটা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। এখনও ভাটার মৌসুম চলবে ২ থেকে ৩ মাস। আমরা ভাটা শ্রমিকরা এই কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করি। ভাটা বন্ধ হলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।
জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি কাজী নাজির আহমেদ মুন্নু বলেন, যশোরের ইটভাটা মালিকরা বিগত ৩৫ থেকে ৪০ বছর অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এ পেশার সঙ্গে জেলার অর্ধ লক্ষাধিক নারী-পুরুষ জড়িত। এখন সরকার নানা অজুহাতে ইটভাটা বন্ধের চক্রান্ত করছে। ইট ভাটা এখন বন্ধ হলে ভাটা মালিকরা পথে বসে যাবে। এছাড়া শ্রমিকরা কাজ হারাবে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই আগামি ৩ মাস আমাদের ভাটার কাজ যেন চালু রাখতে পারি। আমরা এখন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ স্মারকলিপি দিচ্ছি। এরপরও আমাদের দাবির বিষয় বিবেচনা না করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে কোনো আন্দোলন করে তুললে আমাদের কিছু করার থাকবে না।
বিক্ষোভ শেষে জিগজাগ ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এবং ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ (সংশোধন) আইন ২০১৯ এ বর্ণিত জিগজাগ ইটভাটার ছাড়পত্র ও লাইসেন্স প্রাপ্তির জটিলতা নিরসনের জন্য ৬ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসক অফিসের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয় ভাটা মালিকরা। স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম।
স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা ইট প্রস্তুতকারী সমিতির সহ সভাপতি বাবর আলী বাবু, সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা বাবুল, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
স্মারকলিপি গ্রহণের সময় জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সরকারি দপ্তরের সাথে আলাপ আলোচনা করে স্থানীয় ভাবে এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করতে পারি কিনা দেখব। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন আমরা আপনাদের কথা বিবেচনা করে চেষ্টা করবো কাজ চালু রাখার।
এদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভাটা মালিকেরা ট্রাক ভর্তি করে ভাটার শ্রমিক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আনার ফলে শহরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ যানজটে সাধারণ পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচলে ভোগান্তি দেখা গেছে।