নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিবছরের মার্চ, এপ্রিল, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে মোট পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলে। ভোক্তারা মাসের হিসাবে ৩০ কেজি চাল পাবেন। প্রতি কেজির দাম ১৫ টাকা। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশের ন্যায় যশোরেও শুরু হয় ১৫ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রি।
৭ ডিসেম্বর ছিল চাল বিক্রির শেষ দিন। গত ৫ মাসে জেলার এক লাখ ২৬ হাজার ৪২৩ জন এই চাল পেয়েছেন। অনলাইনে নিবন্ধন করতে না পারার কারণে ৮ হাজার ৭০৭ জন চাল পায়নি। তবে আগামী মার্চ মাস থেকে আবারও এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। তখন শতভাগ নিবন্ধিত মানুষ চাল সুবিধা পাবেন।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার মাটিকুমড়া গ্রামের গোলাম মেস্তাফা বলেন, বাজারে চালের দাম বেশি। ঠিকমতো চাল কিনতে পারিনা। খবর পেয়ে কয়েকবার অনলাইন করতে ইউনিয়ন কাউন্সিলে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার নাম অনলাইন করা যায়নি, খুব কষ্টে আছি। চাল পালি খুব উপকার হতো।
জেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, সব ভোক্তা সময়মতো ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করতে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে আসেননি। এ জন্য কিছু মানুষ বাদ পড়েছেন।
এরপর ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটিকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আগের উপকারভোগীর তালিকা থেকে যারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে আসেননি, তাদের পরিবর্তে প্রকৃত হতদরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা তৈরি করে উপজেলা কমিটিতে পাঠানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও বেশির ভাগ ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটি সময়মতো তালিকা পাঠায়নি। তবে আগামী মার্চ মাস থেকে আবারও এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। তখন শতভাগ মানুষকে এর আওতায় আনা হবে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অনিয়ম দূরীকরণ এবং তালিকা সঠিকভাবে তৈরি ও ডুপ্লিকেশন রোধ করতে ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রকৃত হতদরিদ্রদেরকে অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা তৈরি করে উপজেলা কমিটিতে পাঠায় এবং উপজেলা কমিটি তা যাচাই করে অনুমোদন করে। এরপর কমিটি প্রতি পরিবারের একজনের নামে ছবিসহ কার্ড ইস্যু করে।
গত ৩১ আগস্টের মধ্যে উপকারভোগীর তথ্য ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির জন্য যাচাই শেষ করার কথা ছিল। পরে দুই দফা বাড়িয়ে তা গত ১৭ অক্টোবর করা হয়। এ সময়ের মধ্যে যেসব উপকারভোগী তথ্য ডিজিটাল ডেটাবেজ তৈরির জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করেননি, তাদের পরিবর্তে প্রকৃত হতদরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা তৈরি করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে উপজেলা কমিটিতে পাঠানোর জন্য ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটিকে বলা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ইউনিয়ন খাদ্যবান্ধব কমিটি নির্ধারিত সময়ে তালিকা তৈরি করে উপজেলা কমিটিতে পাঠায়নি।
যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্র জানায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে জেলায় তালিকাভুক্ত উপকারভোগীর জন্য আবেদন করেছিলেন এক লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন। এরমধ্যে অনুমোদিত ভোক্তার সংখ্যা হলো ১ লাখ ২৬ হাজার ৪২৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ৮৬ হাজার ৩৬০ জন ও মহিলা রয়েছেন ৪০ হাজার ৭৬৩ জন। তবে অনলাইনে যারা আবেদন করতে পারেনি এমন ভোক্তার সংখ্যা হলো ৮ হাজার ৭০৭ জন। আগামীতে এসব ভোক্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আগামী মার্চ মাস থেকে আবারও শুরু হবে এই কর্মসূচি। সেখানে শতভাগ দরিদ্র মানুষ এই সুবিধা ভোগ করবেন।
জেলা খাদ্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ও যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প। সেখানে তালিকাভুক্ত সবাই ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবেন।