নিজস্ব প্রতিবেদক
এক যুগেও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ না হওয়াতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘এতো সময়েও একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলাতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল না হওয়া এটি দুঃখজনক। নিশ্চয়ই এটি আবেদন প্রক্রিয়াতে ত্রুটি রয়েছে। সরকার জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে খুবই আন্তরিক। আশা করছি দ্রুতই যশোরবাসীর এই দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ ‘অমিত্রাক্ষরে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। মতবিনিময় সভা শেষে সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বিকালে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে যশোর জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি বিষয়ক সভা শুরু হয়। সভায় জেলার শীর্ষ কর্মকর্তারা তাদের দপ্তরের নানা উন্নয়ন ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে।
সভা শেষে জেলা প্রশাসকের মিডিয়াসেলে জানানো হয়, যশোরের দুঃখখ্যাত ভবদাহ জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে সেগুলো বাস্তবায়নের সঙ্গে সুফলও পেতে শুরু করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই সমস্যা সমাধানে সংশিষ্টদের আরো আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জেলায় নিরাপদ সবজি উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিকরণ, বিভিন্ন দপ্তরের শুন্যপদে লোক নিয়োগ, সেবা প্রত্যাশিদের শতভাগ সেবা প্রদান, দুর্নীতিমুক্ত ও দক্ষ প্রশাসন, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় পূর্বক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। সভায় বর্তমান সরকারের পদ্মা সেতুসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন তিনি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২৫ দফা দিক্-নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করারও আহবান জানান এই কর্মকর্তা। একই সাথে তিনি ভবিষ্যতে যেন আর কোন অগ্নিকা- না ঘটে সেব্যাপারে সবাইকে সজাগ থঅকতে নির্দেশনা দেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার, যশোর সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীবৃন্দ, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ আট উপজেলার নির্বাহী অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন যশোরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কালেক্টরেট ভবন ও ভবনের দেয়ালের টেরাকোটায় ফুটিয়ে তোলা মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন শরণার্থীদের দুর্দশা আর যুদ্ধবিভীষিকার গল্প ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ পরিদর্শন করেন। এছাড়া সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দন করা কালেক্টরেট পুকুরটিতে শোভা পাওয়া পদ্মফুল আর পুকুর জুড়ে লুটোপুটি খেলে বেড়ানো রঙিন মাছ অবলোকন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সম্প্রতি সময়ে এসব সংস্কার ও দৃষ্টিনন্দন করাতে জেলা প্রশাসন তমিজুল ইসলাম খানকে প্রশংসা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।