নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে এসআই স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে স্বামী ওসির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার মামলাটি করেছেন যশোর সদর কোর্টের (জিআরও) শাহাজাদী আক্তারের বড় ভাই বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের আমির আলী শেখের ছেলে শেখ রোকন। আসামি মো. কামরুজ্জামান খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত সাত্তার ফকিরের ছেলে। তিনি ঝিনাইদহ পিবিআইতে কর্মরত ছিলেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির অভিযোগ আমলে নিয়ে যশোরের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ২০০০ সালে শাহাজাদীর সাথে কামরুজ্জামানের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। শাহাজাদী কর্মজীবনে টাকা উপার্জন করে খুলনাতে বারো শতক জমি কেনেন। যার দিকে নজর পড়ে কামরুজ্জামানের। এরপর থেকে কামরুজ্জামান ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতে থাকে শাহাজাদীকে। এছাড়াও প্রতিমাসে শাহাজাদীর বেতনের ৪৫ হাজার টাকাও দাবি করেন কামরুজ্জামান। বাধ্য হয়ে গত বছরে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে আদালতে মামলা করেন। যা কাল হয়ে দাঁড়ায় শহাজাদীর। ওই মামলার বিষয়টি জানতে পেরে কামরুজ্জামান আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তার জেরে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর কামরুজ্জামান যশোরের স্টেডিয়াম পাড়ার শাহাজাদীর বাসাতে এসে গালিগালাজ করতে থাকে। এসময় তিনি বলেন, কালই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: যশোরের ব্যাংকগুলোতে ৩২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকার নগদ লেনদেন
একই সাথে যৌতুকের ৫০ লাখ টাকা ও প্রতিমাসে শাহাজাদীর ৪৫ হাজার টাকা বেতন দিতে হবে অন্যথায় হত্যার হুমকি দেয়। শাহাজাদী অপরাগতা প্রকাশ করলেই লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে মারপিট শুরু করে কামরুজ্জামান। চিৎকার দিলে শাহাজাদীর গলাচেপে হত্যা চেষ্টা চালায়। একপর্যায় টেবিলে থাকা ফলকাটা চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় পাশের রুমে থাকা দুই ছেলেসহ প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় কামরুজ্জামান। পরে শাহাজাদীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শাহাজাদী আক্তারের বড় ভাই বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের আমির আলী শেখের ছেলে শেখ রোকন ৩১ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ এর বিচারক গোলাম কবিরে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত পূর্বক আগামি ২ মার্চ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোরের মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী রুহিন বালুজ বলেন, এ ঘটনায় প্রথমে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। যা পুলিশের উর্ধ্বতন মহলের নজরে আসে। পরে তাকে ঝিনাইদহ পিবিআই থেকে রংপুরে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: বোনের সাথে প্রেম করে বিয়ে করায় ভগ্নিপতিকে ছুরি মেরে ক্ষোভ মেটালেন শ্যালক